জোয়ারের পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। হাঁটু পানি মাড়িয়ে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দিয়েছে যাচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। পানি মাড়িয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল থেকে ভারী বর্ষণ আর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে এ ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার সঞ্জয় সেন বলেন, সকাল থেকে হাসপাতালের নিচ তলায় হাঁটু পানি। জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হচ্ছে এর মধ্যে।
স্থানীয়রা জানান, নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া দ্রুত পানি নামতে পারছে না। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে ভারী বর্ষণ আর জোয়ারের পানিতে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো.ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, উপজেলার প্রায় এলাকায় গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তালিকা করছি কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আতিক উল্লাহ বলেন, বোয়ালখালীতে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ হয়ে গেছে। অবশিষ্ট জমিতেও চাষাবাদ চলছে।
পানি জমে থাকলে আমন ধানের ক্ষতি হবে। আউশ ধানও মাঠে রয়েছে। ফলে কি পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তা এই মূহুর্তে বলা যাচ্ছে না।
পানি বাড়তে থাকায় শঙ্কায় রয়েছেন মাছ চাষীরা। অনেকের পুকুর ডুবে চাষের মাছ ছড়িয়ে পড়েছে বিলে খালে।
জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ও কর্ণফুলী নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় কালুরঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেরি পরিচালনাকারী সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, ফেরিঘাটের পানি কমলে ফেরি চলাচল শুরু হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সুজন কান্তি দাশ জানান, পানিবন্দী হয়ে পড়া দূর্গত পরিবারের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও একশত শুকনো খাবার সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সাম্প্রতিক বন্যা মোকাবেলা করতে উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ এনও) হিমাদ্রি খীস ।তিনি বলেন, উপজেলায় নিন্মাঞ্চলে বিভিন্ন এলাকায় ৭ টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এছাাড়া মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। এলাকায় জনগণকে সচেতন ও সর্তক থাকতে কন্ট্রোল রুমের মধ্যে দিয়ে প্রচার প্রচারণা চলছে।
তিনি আরো বলেন, যোগাযোগের জন্য সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে। যদি কোন পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতে ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।