ksrm-ads

২৫ মার্চ ২০২৫

ksrm-ads

টানা ছুটিতে বান্দরবানে পর্যটকের ঢল

আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান »

সবুজ পাহাড় ঘেরা প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের শহর বান্দরবান। পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভ্রমণপিপাসুরা সুযোগ পেলেই ছুটে আসেন এখানকার পর্যটন স্পটগুলোতে। নীলাচল ও নীলগীরির মেঘ আর শৈলপ্রপাতের শীতল ঝর্ণা যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। ছুটিতে আসা পর্যটকরা শহরের কোলাহল থেকে স্বস্তির সন্ধানে মুগ্ধ হয়ে ঘুরে বেড়ান বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, শৈলপ্রপাত ও নীলগীরি। অনেকে নীলাচল পাহাড় থেকে দেখছেন সবুজ পাহাড়।

এদিকে সরকারি বিশেষ ছুটির দিনে পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। এরই মধ্যে বেশিরভাগ আবাসিক হোটেল-মোটেল ও কটেজে শতভাগ বুকিং শেষ হয়েছে। ফলে নতুন করে বুকিং পাচ্ছেন না অনেকে। টানা চারদিন ছুটিতে বান্দরবানে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। অনেকেই বৌদ্ধ ধর্মালম্বী মারমা জনগোষ্ঠীদের পাহাড়ের ঐতিহ্য ওয়াইগ্যোয়াই (প্রবরাণা পূর্ণিমা) উৎসবটি দেখার জন্য বেছে নিয়েছেন।

বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পাহাড়ি কন্যা বান্দরবান। পরিবার-পরিজন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মেঘলা, নীলাচল, নীলগিরিসহ বেশ কয়েকটি স্পটে ছুটে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা। বেশিরভাগ পর্যটকরা ছাদ খোলা চাঁদের গাড়ি (মাহেন্দ্র) যোগে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি সড়কে ছুটছেন সৌন্দর্য দেখতে। আবার কেউ কেউ চারদিকে সবুজ পাহাড় আর উঁচুনিচু পাহাড়ি মেঠো পথ ধরে ট্র্যাকিং করে স্বচ্ছ জলধারায় বাঁশের ভেলায় রোয়াংছড়ির দেবতাখুমে যাচ্ছে।

এদিকে, দীর্ঘ দিন পর উৎসবের ছুটিতে পর্যটকদের আগমন বাড়ায় খুশি এখানকার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহী থেকে পরিবার নিয়ে ভ্রমণে আসা মোহাম্মদ সোয়াইবুল বলেন, জীপ ভাড়া করে বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছি, সবকটি সৌন্দর্য দেখতে অতুলনীয়। তবে পাহাড়ের চূড়ায় নির্মিত বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের স্বর্ণমন্দির (প্যাগোডা) পর্যটকদের জন্য নিষেধাজ্ঞার কারণে বন্ধ ছিল। ইচ্ছে থাকার পরও তা দেখা সম্ভব হয়নি।

ঢাকা থেকে দলবল নিয়ে বেড়াতে আসে জসিম, আকাশ, রনি, শহীদুলরা। তারা সবাই বাইকার। তারা জানান, হাতে কয়েকদিন সময় নিয়ে প্রায় ২০ জন বান্দরবান বেড়াতে এসেছেন। দলটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা, পাশাপাশি পাহাড়িদের হাতে পরিবেশিত খাবারের তৃপ্তি নিয়ে মারমা জনগোষ্ঠীদের ঐতিহ্য ওয়াগ্যোয়াই উৎসবে আকাশে ফানুস উড়ানোর দৃশ্য আর রথযাত্রা দেখা।

লাবাতং হিল রিসোর্টের সহকারি ম্যানেজার ফাহাদ সাদিক জানান, ৫ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত রিসোর্টের সকল কক্ষ বুকিং নিয়েছে ভ্রমণ পিপাসুরা। এছাড়া আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত রিসোর্টের সকল কক্ষ বুকিং থাকবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

বান্দরবান জেলার হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, হোটেলগুলো ৭০-৮০ শতাংশ বুকিং হলেও অধিকাংশ কটেজ-রিসোর্ট পর্যটকের আগমনে পরিপূর্ণ। বান্দরবানে পাঁচ হাজারের বেশি পর্যটকের ধারণক্ষমতা থাকায় নতুন ভ্রমণপ্রত্যাশীদের আবাসন সংকট দেখা দেওয়ার তেমন সম্ভাবনা নেই।

বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, টানা ছুটিতে বান্দরবানে যথেষ্ট পরিমাণে পর্যটক বেড়াতে আসছে। তাদের সুরক্ষা বজায় রাখতে প্রত্যেকটি পর্যটন স্পটে পোশাকধারী পুলিশের সঙ্গে সাদা পোশাকেও কাজ করছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক মোটরসাইকেলে করে পেট্রোল টিম টহলে রয়েছে।

আরও পড়ুন