কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় ভুট্টা ও সবজি ক্ষেত পাহারা দিতে যাওয়া চার কৃষককে অবহরণ করেছে শসস্ত্র ডাকাতদল।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) দিনগত রাত ১০টার দিকে হ্নীলা লেচুয়াপ্রাং পাহাড়ি এলাকার ভুট্টা ক্ষেত থেকে তারা অপহরণের শিকার হন বলে জানিয়েছে ভিকটিমদের পরিবার। রবিবার (৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েও তাদের বিষয়ে কোন খোঁজ মিলেনি।
অপহৃতরা হলেন, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ৬নম্বর বড় লেচুয়াপ্রাং মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুস সালাম (৪৮), একই এলাকার ছৈয়দ হোসেনে গুরা মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান (৩২), রাজা মিয়ার ছেলে মুহিব উল্লাহ (১৫) ও ফজলুল করিমের ছেলে আব্দুল হাকিম (৪০)।
অপহৃত ভিকটিম আব্দুস সালামের ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম জানান, আমার বড় ভাইসহ স্থানীয় আরও ৩ কৃষক প্রতিদিনের মত পাহাড়ে কৃষি কাজ করতে যান। পাহাড়ে ভিতরে ভুট্রা চাষ, ধান চাষ, শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের চাষাবাদ করা হয়। পাহাড়ি হাতির তাড়াতে তারা রাত জেগে পাহারা দিতে ক্ষেত এলাকায় থেকে যান। ভোররাতে খবর আসে ভুট্টা চাষে কাজ ও পাহারা দিতে যাওয়া আমার ভাইসহ অন্য ৩ কৃষককে অপহরণ করা হয়েছে। পুলিশকে জানানোর পর রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাহাড়ে পাহাড়ে তল্লাশী চালিয়েও তাদের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে, এখনো মুক্তিপণ চেয়েও কোন ফোন কল আসেনি।
বনবিভাগের স্থানীয় সিপিজি সদস্য মো. শফিক (৪৫) জানান, আমরা বনবিভাগের সদস্যদের সাথে বন পাহারাদল হিসাবে কাজ করি। পাহাড়ের ভিতর গেলে মনে এক ধরনের ভয় কাজ করে। কোন্ সময় অপহরণের শিকার হচ্ছি তার কোন ঠিক নেই। এর আগেও এ এলাকা থেকে অনেকজনকে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে পাহাড়ের ভিতর আটকে রেখে মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দেয়। শনিবার রাতেও ৪ কৃষককে পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে আমরাও পুলিশের সাথে তল্লাশী চালিয়েছি।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী জানান, অপহৃত ভিকটিমের পরিবার সকালে ফোন দিয়ে বলেছে- লেচুয়াপ্রাং পাহাড়ি এলাকায় ৪ কৃষককে ভুট্টা ক্ষেত থেকে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অপহরণ করেছে। আমি বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর স্থানীয়দের সহায়তায় পাহাড়ে অভিযান চালানো হয়। তবে এখনো পযর্ন্ত অপহৃত ভিকটিমদের কোন খোঁজ মিলেনি।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল হালিম জানান, ৪ কৃষক অপহরণের ঘটনা জানার পর ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে বিকেল পর্যন্ত ছিলাম। তাদের উদ্ধারে খোজঁ খবর নেয়া হচ্ছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, টেকনাফের বাহারছড়ার জাহাজপুরা পাহাড়ি এলাকার ছরায় মাছ ধরতে গিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর অপহরণের শিকার হন শিক্ষার্থীসহ ৮ জন। ৪দিনের মাথায় জনপ্রতি নির্দিষ্ট পরিমাণ মুক্তিপণ পরিশোধের পর ২২ ডিসেম্বর ভোর রাত ২টার দিকে তারা ছাড়া পেয়েছেন। এর পক্ষকাল পর ৪ কৃষককে অপহরণ করেছে পাহাড়ে অবস্থান করা দুর্বৃত্তরা