কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভে সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে টেকনাফ অংশে ভাঙন ধরেছে। ছোট-বড় ডজনাধিক স্পটে এ ভাঙন জোয়ার এলেই বাড়তে থাকায় পুরো সড়ক তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। ভেঙে যাওয়া অংশ শিগগিরই মেরামত করা সম্ভব না হলে সড়ক তলিয়ে গিয়ে মেরিন ড্রাইভে টেকনাফ-কক্সবাজার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহম্পতিবার (৩ আগস্ট) সকালের জোয়ারে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের পশ্চিম মুন্ডার ডেইল এলাকার প্রায় অর্ধশত মিটার সড়ক ঢেউয়ের তোড়ে ভেঙে গেছে। এর আগে গত দুই দিনের বাড়ন্ত জোয়ারের পানিতে টেকনাফের বাহারছড়া, হাদুরছড়া, দক্ষিণ মুন্ডার ডেইল এলাকায় একাধিক স্পটে মেরিন ড্রাইভ ভাঙ্গনের কবলে পড়ে।
স্থানীয় এলাকাবাসী বলছেন, বৈরী আবহাওয়া ও ভরা কাটালের কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়ছে। জোয়ারে বাড়ন্ত পানির তোড়ে সড়ক রক্ষায় ব্যবহার করা জিও ব্যাগ দুর্বল হয়ে নেতিয়ে গেছে। এরই মধ্যে জিও ব্যাগ ডিঙ্গিয়ে সড়কের বেশ কয়েকটি অংশ গ্রাস করছে সাগর। তাদের মতে, সড়কের অতি নিকটবর্তী এলাকা হতে বালু তুলে জমি ভরাট, জিও ব্যাগ ভরাট করায় সাগরে সামান্য পানি বাড়লে-ই সড়ক ভাঙনের কবলে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল কাদের (৫৫) বলেন, এর আগে কখনও এভাবে ভাঙন ধরেনি মেরিন ড্রাইভে। সাগরের ঢেউয়ের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় ঢেউ বড় হয়ে এসে আঁচড়ে পড়ছে মেরিন ড্রাইভে। জিও ব্যাগ টপকে ঢেউগুলো সড়কে উঠায় সড়কটি ভাঙনে পড়ছে।
সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ সেলিম বলেন, সাগরের ঢেউয়ের তোড়ে মেরিন ড্রাইভের বেশ কয়েকটি স্পটে ব্যাপক ভাঙন ধরেছে। অন্যবারের তুলনায় এবারের ভাঙন আশংকাজনক।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগরের জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এ বাড়ন্ত পানির তোড়ে মেরিন ড্রাইভের টেকনাফ অংশের কয়েকটি স্পটে ভাঙন ধরেছে। ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী কাজও শুরু করছে। আশা করছি দ্রুত সময়ে এ সমস্য সমাধান হবে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্রের তীর ধরে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠা ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উদ্বোধন হয় ২০১৭ সালের ৬ মে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তবে ১৯৯১-৯২ সালে এ সড়ক প্রকল্পটি গ্রহণের পর থেকেই নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সড়কটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীন হলেও নির্মাণ তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল কোর। নয়নাভিরাম সড়কটি দেশের পর্যটন শিল্পের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান।