বান্দরবান প্রতিনিধি »
গ্রেফতার দুই জঙ্গি সদস্যের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রেমাক্রীর প্রাংসা ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ের লুয়ংমুয়াল পাড়ায় আল আমিনের মরদেহ উদ্ধারের জন্য সেখানে যায় পুলিশ, র্যাব ও স্থানীয় প্রশাসনের একটি দল। কিন্তু সেখানে কম্বল ছাড়া আল আমিনের মরদেহ পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় নিহত জঙ্গি সদস্য আল আমিনের পিতা নুরুল ইসলাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) মামলাটি দাখিলের পর ৫ দিনের মধ্যে রুমা থানা কর্মকর্তাকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ এস এম এমরান।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম ডি খলিল।
অভিযুক্তরা হলেন- কুমিল্লার আনিসুর রহমান মাহমুদ (৩২), অজ্ঞাত সাং শামীম মাহফুজ (৪৭), ইসমাইল হোসেন হানজালা ওরফে ফাহিম (৩৪), মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ হাবিব (৩৫), মো. বায়োজিদ ইসলাম মোয়াজ ওরফে বাইরু (২১), দিদার ওরফে চম্পাই(২৭), সালেহ আহম্মদ সাইহা(২৭), ইমরান বিন রহমান শিথিল ওরফে বিল্লাল (১৮), নোয়াখালীর নিজামুদ্দিন হিরন ইউসুফ ওরফে বাপুয়াল(৩২), নারায়ণগঞ্জের মোশাররফ হোসেন বাবু (৩৪), সিলেটের আব্দুল্লাহ মায়মুন ওরফে শায়েখ(৩৪), মাসকুর রহমান রনবীর(৪৪), সুনামগঞ্জের সৈয়দ মারুফ আহমেদ মানিক (৩১), আব্দুল কাদের সুজন ওরফে ফয়েজ সোহেল (২৮) শিবির আহমেদ (২৬), মো. সাদিকুর রহমান সুমন ওরফে ফারকুন(২৯), বান্দরবানের নাথানা লনচেও ওরফে নাথান বম (৫০), লাল মোহন বিয়াল ওরফে কর্নেল সলোমান (৫০), কর্নেল সলোমান (৫০) ও লালদন সাং বম পাদন (২৭)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট কুমিল্লার কান্দির পাড়া এলাকা থেকে তাবলিগে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের হয় আমিনুল ইসলাম আলামিন। তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে না পারায় গত ১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন পিতা নুরুল ইসলাম।
পরে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, আল আমিনসহ ৭ তরুণ কুমিল্লা থেকে এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ৫০ জন নিখোঁজ হয়।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, কুমিল্লায় কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ এলাকার কুবা মসজিদের ইমাম হাবিবুল্লাহ ওরফে হাবিবসহ বেশ কয়েকজন মিথ্যা ধর্মীয় অপব্যাখ্যায় প্রচারণা চালায়। সে প্রচারণায় আমিনুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন তরুণ নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামক জঙ্গি সংগঠন গড়ে তোলা হয়। সংগঠনটির দুর্গম এলাকায় পাহাড়ের সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর শীর্ষ স্থানীয় নেতা ও সদস্যদের আশ্রয়ে জঙ্গী প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তরুণদের প্রেরণ করে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) তথ্য মতে, আল আমিন সংগঠনের সম্পৃক্ত থাকতে অপরাগতা প্রকাশ করলে সংগঠনের তথ্য ফাঁস হওয়ার ভয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তার মরদেহ বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম লুমউয়াল পাড়া এলাকার পাহাড়ের ঢালের অজ্ঞাত স্থানে গুম করে ফেলে। এ অবস্থায় আল আমিনের মরদেহ উদ্ধার পূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ফৌজদারি অভিযোগ করা হয় ।