জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার »
দস্যুপনা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাওয়াই কাল হলো কক্সবাজারের মহেশখালীতে একরাম (৩০) নামের যুবককের। তাকে বুধবার (৩০ জুন) দিনগত রাত ১১টার দিকে মাতারবাড়ির উত্তর রাজঘাট ওয়াপদা পাড়া এলাকায় কুপিয়ে হত্যার পর কোহেলিয়া নদীতে ফেলে দিয়ে পালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। গত বছর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে কারাভোগের পর সম্প্রতি জামিনে এসে তিনি হত্যার স্বীকার হন।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবার সকালে কবির নামে একজনকে ধরে গণপিটুনির পর পুলিশে দিয়েছে জনতা। নিহত একরামুল হক মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলার মৃত আব্দুস ছাত্তারের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার (৩০ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাতারবাড়ির উত্তর রাজঘাট ওয়াপদা পাড়া এলাকায় বেড়াতে আসে একরাম। এসময় উৎপতে থাকা কিছু সন্ত্রাসী তাকে টেনে নিয়ে গিয়ে কোহেলিয়া নদীর পাড়ে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে পেলে হত্যা করে নদীতে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী দেখতে পেলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও পুলিশকে খবর দেয়। পরে এএসপির নেতৃত্বে একটি পুলিশ টিম ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকালে কালরমারছড়ার উত্তর নলবিলা এলাকা থেকে কবির নামে এক ব্যক্তিকে জনতা আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে।
নিহত একরামের মামাতো ভাই হায়দার জানান, একরাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে আলোর পথে এসে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছিলেন। কিন্তু সম্প্রীতি সময়ে মহেশখালীর কালারমারছড়ার চালিয়াতলী ও মাতারবাড়ি সড়কে ডাকাতি সংগঠিত হয়। ওই ডাকাতদের ধরতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করে আসছিলেন নিহত একরাম।
নিহতের মামা কালারমার ছড়ার ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার লিয়াকত আলী খান বলেন, আমার ভাগিনা একরাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে আত্মসমর্পণ করে আলোর পথে এসেছিল। কিন্তু স্থানীয় কিছু মানুষের ইন্ধনে চিহ্নিত সন্ত্রাসী কবিরের নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী তাকে হত্যা।
মাতারবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, ঘটনাটি শুনার পর আমিসহ আমার ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারদের নিয়ে ঘটনাস্থলে আসি। উপস্থিত এলাকাবাসীর কাছ থেকে পুরো ঘটনা শুনে আমার বোধগম্য হয়। এটা পুরোপুরি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এ ধরনের ঘটনা সত্যিই নিন্দাজনক। এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।
মহেশখালী থানার ওসি আব্দুল হাই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সাথে কে বা কারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনের আওয়াতায় আনা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাধারা/এফএস/এআই