ksrm-ads

১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ksrm-ads

সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধার অভিযোগ

দেশের পটপরিবর্তনকে পুঁজি করে কলাতলীতে হোটেল দখল!

দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে পুঁজি করে কক্সবাজারের পর্যটন জোন কলাতলীতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে ‘হোটেল হোয়াইট বীচ’ জবরদখলের অভিযোগ করেছেন অসহায় বৃদ্ধা শাহনুর বেগম। সোমবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ক্ষমতার পট পরিবর্তনের দিন ৫ আগস্ট প্রথম দফায় দখলে ব্যর্থ হয়ে ১৭ আগস্ট দ্বিতীয় দফা ফের জবরদখল করা হয় স্বামীর রেখে যাওয়া তার একমাত্র সম্বলটি।

অভিযোগকারি শাহনুর বেগম উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং এলাকার প্রয়াত শাহাব উদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহনুর বলেন, সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল ক্ষমতার পটপরিবর্তনকে পুঁজি করে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে তাদের হোটেলটি জবরদখল করেছেন। ১৭ আগস্ট শিবির ক্যাডার পরিচয় দেয়া আশরাফ নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ইয়াছিন, সিরাজসহ ৩০-৫০ জনের একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে হোটেল হোয়াইট বীচ জবর দখল করে।

এসময় সন্ত্রাসীরা বয়োবৃদ্ধ শাহনুর বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মারধরও করে। পরে রাতারাতি নাম পরিবর্তন করে হোটেল মারমেইড নাম দিয়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়।

তিনি উল্লেখ করেন, জীবদ্দশায় সাহাব উদ্দীন চৌধুরী আমমোক্তারনামামূলে সেনা কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিলকে তাদের হোটেল (হোয়াইট বিচ) দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা লেনদেনসহ নানা শর্ত ভঙ্গ করায় ওই আমমোক্তারনামা বাতিল করা হয়। এরপর নানা মামলা মোকদ্দমায় আদালত সাহাবুদ্দিন চৌধুরীর পক্ষে স্বত্ব ঘোষণা করে রায় দেয়। দীর্ঘদিন সাহাব উদ্দীনের ভোগদখলে থাকার পর ওয়ান-ইলেভেনের সময় সেনার প্রভাব খাটিয়ে হোটেলটি দখল করেছিলেন ইব্রাহিম খলিল। ওই সময় সাহাব উদ্দীন চৌধুরীকে মামলা-হামলাসাহ নানা ভাবে হয়রানি করেছিলেন ইব্রাহিম। সে চাপে হার্টঅ্যাটাক করে মারা যান সাহাব উদ্দীন চৌধুরী।

পরে ওয়ান-ইলেভেন সরকার চলে গেলে হোটেলটি আবার বুঝে পান সাহাব উদ্দীন চৌধুরীর ওয়ারিশরা। সেই থেকে তারা হোটেলটি ভোগ দখলে রয়েছেন। এর মধ্যে ২০২১ সাল পর্যন্ত মাসেদুল হক রাশদকে হোটেলটি ভাড়া দেয়া হয়। এরপর ২১সাল থেকে ২৬ সালের জন্য আরেকটি ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটকে হোটেলটি ভাড়া দেয়া হয়েছে।

কিন্তু এরমধ্যে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ওইদিনই ভাড়াটে লোকজন নিয়ে হোটেলটি দখলে নিতে হামলা চালায় ইব্রাহিম খলিল। এসময় হোটেলে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। নগদ ২০ লাখ টাকা ও সরঞ্জামসহ অন্তত ৪৫ লাখ টাকার লুটপাট চালানো হয়েছে। পরদিন ৬ আগস্ট ওয়ারিশরা হোটেলে গিয়ে উঠলে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। কিন্তু ১৭ আগস্ট আরো সংঘবদ্ধ হয়ে এসে তাদের প্রহারের পর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আবার হোটেলটি দখলে নিয়েছে বলে শাহনুর বেগম জানান।

স্বামীর রেখে যাওয়া একমাত্র সম্বল হোটেল হোয়াট বীচ তাদের পরিবারের একমাত্র অবলম্বন। দখলদারদের হাত থেকে হোটেলটি উদ্বারে বর্তমান সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন বৃদ্ধা শাহানুর বেগম ও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পরিবারের সদস্যরা। তারা প্রশাসনে অভিযোগ দিয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না বলেও উল্লেখ করেন তারা।

এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে হোটেলটি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ করা আশরাফের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। রিং হলেও ফোন রিসিভ না করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন