বাংলাধারা প্রতিবেদন »
ঈদ উপলক্ষে দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায় হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়েছেন বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক।
মঙ্গলবার (২১ মে) চট্টগ্রামের দামপাড়া ও স্টেশন রোডের কাউন্টারগুলোতে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানের অংশ হিসেবে প্রথমে তিনি দামপাড়াস্থ বাস কাউন্টারগুলোতে যান। তিনি সেখানে সৌদিয়া, শ্যামলী, ইউনিকসহ বেশ কয়কটি কাউন্টারে গিয়ে ঈদ উপলক্ষে কোন বাড়তি ভাড়া নেয়া হচ্ছে কিনা যাচাই করেন।
তিনি এখানে বিক্রিত টিকেটের কপি চেক করে দেখেন এবং যাত্রীদের সাথেও কথা বলেন। তবে এখানকার কাউন্টারগুলোতে বাড়তি ভাড়া নেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যাত্রীদের কাছ থেকেও এখানে বাড়তি ভাড়া নেয়ার কোন অভিযোগ পাওয়া না গেলেও এক যাত্রী অভিযোগ করেন, তিনি ঈদের টিকেট করার জন্য স্টেশন রোডে গিয়েছিলেন। সেখানে শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারে তার কাছ থেকে জুনের ২ তারিখে রাজশাহীর ভাড়া চাওয়া হয় ১২০০ টাকা যেখানে রাজশাহীর নিয়মিত ভাড়া হলো ৮০০ টাকা। যার কারণে তিনি সেখানে টিকেট না করে দামপাড়া চলে এসেছেন।
যাত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের অভিযোগ পেয়ে পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, মনজুরুল হক স্টেশন রোডের কাউন্টারগুলোতে যাত্রীবেশে অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি সেখানে তার মোবাইল কোর্টের একজন স্টাফকে শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারে পাঠান এবং তিনি নিজে যাত্রীবেশে হানিফ পরিবহন, এনা পরিবহন ও শাহী পরিবহনের কাউন্টারে যান।
ম্যাজিস্ট্রেট যাত্রীবেশে হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে ২ জুন তারিখের রাজশাহীর টিকেট চাইলে তাঁকে বলা হয় ১২০০ টাকা দিতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়মিত ভাড়া ৮০০ টাকা উল্লেখ করে বাড়তি ভাড়া কেন নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে টিকেট বিক্রেতা তাঁকে বলেন, ঈদের সময় ভাড়াতো বেশি হবেই। এর কমে হবে না।
অভিযানে শ্যামলী পরিবহন, হানিফ পরিবহন ও শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস এর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এসব পরিবহন রাজশাহী, দিনাজপুর, পাবনা, নওগাঁসহ উত্তরবঙ্গের সব গন্তব্যে ঈদের অগ্রিম টিকেটের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। এমতাবস্থায়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক শ্যামলী পরিবহনকে ২৫ হাজার টাকা, হানিফ পরিবহনকে ২০ হাজার টাকা এবং শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস কে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
পরে এ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঈদ উপলক্ষে নিয়মিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া যাবে না বলে কাউন্টারগুলোকে কঠোরভাবে হুশিয়ার করে দেন। তিনি আরো বলেন, ঈদ পর্যন্ত চট্টগ্রামের কাউন্টারগুলোতে তিনি নিয়মিত এ অভিযান পরিচালনা করবেন। প্রয়োজনে আজকের মতো ছদ্মবেশে তিনি অভিযান চালাবেন। পরে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের কারাদণ্ড দিতেও তিনি কুন্ঠিত হবেন না বলে হুশিয়ার করে দেন।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/টিএম/বি