দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দীর্ঘ ১৫ বছরের গণতন্ত্রহীনতায় দেশের যে পরিস্থিতি হয়েছিল তা থেকে উত্তরণে চ্যালেঞ্জ গ্রহণে তার সরকার প্রস্তুত। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফল ধরে রাখতে সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।
তিনি বলেছেন, রাতারাতি এ অবস্থা থেকে উত্তরণ কঠিন। দেশ পুনর্গঠনের কাজে হাত দিতে হয়েছে। বর্তমান সরকারের দুই সপ্তাহ শেষে জনগণের যে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেছে তা অনুপ্রেরণামূলক।
জিম্মি করে দাবি আদায় না করার অনুরোধও করেন তিনি।
দায়িত্ব নেওয়ার ১৭ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বারের মত জাতির উদ্দেশে ভাষণে এসব কথা বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তার এই ভাষণ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হয়।
ইউনূস বলেন, ‘বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করার মাত্র দুই সপ্তাহ শেষ হলো। কর্মযাত্রার প্রথম পর্যায়ে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে আপনাদের কাছ থেকে যে সমর্থন পাচ্ছি সেজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আমরা অনুধাবন করছি যে আমাদের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা অনেক। এ প্রত্যাশা পূরণে আমরা বদ্ধপরিকর।’
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ৮ অগাস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে সরকার পরিচালনা করছেন মুহাম্মদ ইউনূস।
গত ৮ অগাস্ট তার নেতৃত্বাধীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেদিনও তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন।
সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন সরকার পতনের একদফায় পরিণত হলে গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
তিন বাহিনীর প্রধান, বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
পরে সরকার পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হতে রাজি হন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস।
দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই সপ্তাহ না যেতেই দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে নজিরবিহীন বন্যার ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। তাছাড়া আনসারসহ বিভিন্ন পক্ষ প্রায় প্রতিদিনই নানা দাবি নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ করছে, সেসবও সরকারকে সামলাতে হচ্ছে।