২০২৪ সালে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ সংখ্যক কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে সক্ষম হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্দরে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৭ টিইইউস কনটেইনার এবং ১২ কোটি ৩৯ লাখ ৮৬ হাজার ১৪ টন কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে।বহির্নোঙরে জাহাজের গড় অপেক্ষার সময় ১ দিনে নেমে এসেছে।
২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ দশমিক ২৭ মিলিয়ন টিইইউস (২০ ফুট হিসেবে) কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। কার্গো হ্যান্ডলিং করেছে ১২৩ মিলিয়ন মেট্রিকটন।জাহাজ হ্যান্ডলিং করেছে ৩ হাজার ৮৬৭টি। ২০২৩ সালের তুলনায় কনটেইনারে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ, কার্গোতে ৩ দশমিক ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বন্দরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৩৬২ কন্টেনার, ফেব্রুয়ারিতে ২ লাখ ৪৫ হাজার ২৬, মার্চে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫৭৪, এপ্রিলে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৬৯, মে মাসে ৩ লাখ ১৯৩, জুনে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৭৭৩, জুলাইয়ে ২ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৫, আগস্টে ২ লাখ ৭১ হাজার ৮৬৯, সেপ্টেম্বরে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩২৪, অক্টোবরে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৩৮৯ এবং নভেম্বরে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৩১৮ টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। ডিসেম্বরের ৩০ দিনে হ্যান্ডলিং হয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৩৪৩ টিইইউএস কন্টেনার। গতকালের মোট হিসাব প্রকাশ করা হবে আজ সকাল ৮টায়। ধারণা করা হচ্ছে, দিনে গড়ে দশ হাজার টিইইউএস কন্টেনার হ্যান্ডলিং হলেও ২০২৪ সালে বন্দরের মোট কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ ৩২ লাখ ৮০ হাজার টিইইউএসের কাছাকাছি হবে।
বন্দর সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে এত কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের ইতিহাস নেই। ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ও এর আওতাধীন কমলাপুর কন্টেনার ডিপো এবং পানগাঁও নৌ টার্মিনাল দিয়ে আমদানি–রপ্তানি পণ্য বোঝাই এবং খালি কন্টেনার মিলে মোট হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৩০ লাখ ৫০ হাজার টিইইউস। ২০২২ সালে ৩১ লাখ ৪২ হাজার ৫০৪, ২০২১ সালে ৩২ লাখ ১৪ হাজার, ২০২০ সালে ২৮ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৭, ২০১৯ সালে ৩০ লাখ ৮৮ হাজার ১৮৭, ২০১৮ সালে ২৯ লাখ ৩ হাজার ৯৯৬ এবং ২০১৭ সালে ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ২২৩ কন্টেনার হ্যান্ডলিং করেছিল চট্টগ্রাম বন্দর।
বিদায়ী বছরের গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে খোলা পণ্য (জেনারেল কার্গো) হ্যান্ডলিং করেছে ১২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৯ হাজার ৩৭৯ টন। আজ সকাল ৮টায় বিদায়ী বছরের সর্বমোট হিসাব করলে এ সংখ্যা ১২ কোটি ৪০ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে। ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ১২ কোটি ২ লাখ টন, ২০২২ সালে ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৬৫ হাজার ৬৮২ টন, ২০২১ সালে ১১ কোটি ৬৬ লাখ টন, ২০২০ সালে ১০ কোটি ৩২ লাখ ৯ হাজার টন এবং ২০১৯ সালে ১০ কোটি ৩০ লাখ ৭৭ হাজার টন পণ্য হ্যান্ডলিং করেছিল। বিদায়ী বছরে আগের বছরের তুলনায় ৩৫ লাখ টনের বেশি খোলা পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ড করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর।
বন্দর চেয়ারম্যান জানান, ২০২৪ সালের পঞ্জিকাবর্ষ অনুযায়ী রাজস্ব আয় ৫০৫৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা যা গত বছরের (রাজস্ব আয় ৪১৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা) তুলনায় ২১ দশমিক ৩৯ বেশি এবং রাজস্ব উদ্বৃত্ত ২০২৪ সালের পঞ্জিকাবর্ষানুসারে ২৯৪৮ কোটি ৯৭ লাখ যা গত বছরের (২১৪৩ কোটি ১০ লাখ টাকা) চেয়ে ৩৭ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের পঞ্জিকাবর্ষ অনুযায়ী রাজস্ব ব্যয় ২১০৭ কোটি ২ লাখ টাকা যা গত বছরের (রাজস্ব ব্যয় ২০২২ কোটি ৮ লাখ টাকা) তুলনায় ৪ দশমিক ২০ শতাংশ কম।
চট্টগ্রাম বন্দরে ১৪-১৫ বছর যাবত থাকা অতিদাহ্য সোডিয়াম নাইট্রো ক্লোরাইডবাহী ৪টি কনটেইনার গত ২৭ অক্টোবর নিলামের মাধ্যমে বিডারকে ডেলিভারি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ১৫২ টিইইউস কনটেইনারের পণ্য ধ্বংসের অপেক্ষায় রয়েছে। ইতিমধ্যে শুল্ক বিভাগ কর্তৃক (৬ অক্টোবর থেকে ২৩ ডিসেম্বর) ৫৯ টিইইউস কনটেইনারের পণ্য ধ্বংস করা হয়েছে।