দেবাশীষ বড়ুয়া রাজু, বোয়ালখালী »
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কর্ণফুলী নদীর বুকে জেগে থাকা নাজিরার চরে এখন মিষ্টি আলুর আবাদে আশা জাগিয়েছে কৃষকদের। চরের প্রায় ১০০ একর জায়গাজুড়ে মিষ্টি আলু, ক্ষীরা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, করলা, সিম, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন, টমেটোসহ বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করা হয়েছে।
জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর বুকে জেগে থাকা নাজিরার চরে উপজেলার শ্রীপুর, খরণদ্বীপ ও জৈষ্ঠ্যপুরা গ্রামের বাসিন্দারা চাষাবাদ করেন। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও চরের জমিতে চাষবাদ হয়েছে নানা জাতের শীতকালীন শাক সবজি। এ চরে নৌকায় যাতায়াত করেন কৃষকরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, নদীর বুকে জেগে থাকা বিশালাকৃতির এ চরে স্থানীয় কৃষকেরা ক্ষীরা, করলা, মিষ্টি আলু, মিষ্টিকুমড়া, মরিচসহ বিভিন্ন সবজির আবাদ করছেন। ফলে নদীর এ চরে এখন সবুজের সমারোহ।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সৌমিত্র দে জানান, নাজিরার চরে সারাবছর ধরেই চাষ হয়। তবে মিষ্টি আলুর চাষ হয় বেশি। এবার কন্দাল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশিয় উন্নত জাতের মিষ্টি আলুর চারটি প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে নাজিরার চরে। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও উচ্চ ফলনশীল দেশিয় উন্নত জাতের মিষ্টি আলু লাভের আশায় চাষ করেছেন এলাকার কৃষকরা। অল্প খরচে ও কম পরিচর্যায় বেশি ফলন এবং অধিক লাভ হওয়ায় মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহী বেশি এ অঞ্চলের কৃষকদের। ফলন ভালো হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে। আগামী চৈত্র-বৈশাখ মাসে মিষ্টি আলু তুলবে কৃষকরা। অনেকে আগাম তুলেও বিক্রি করেন ভালো দামের আশায়।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, নদী ভাঙনরোধে ব্লক তৈরি করা হয়েছিল নাজিরার চরে। সেই সময় আনা পাথরের কারণে প্রায় ১০একর জায়গায় চাষ করা যাচ্ছে না। বাকি অংশে চাষ হয়েছে শাক-সবজি ও মিষ্টি আলুর। নাজিরার চরে আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন তাঁরা। এতে স্থানীয় কৃষকদের আয়রোজগারও ভালো হয়।
উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের খরণদ্বীপ গ্রামের মো. শহীদুল আলম বলেন, নাজিরার চরের নিজস্ব ১২০ শতক জমিতে মিষ্টি আলু, ক্ষীরা, মিষ্টিকুমড়া, মূলা ও মরিচ চাষ করেছেন। প্রতিবছরই তিনি চাষ করেন নাজিরার চরে। তবে সার-বীজ, মজুরিসহ সব কিছুরই দাম বাড়তি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবারও ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
কৃষক মো. ইউসুফ মিয়া জানান, নদীর চরে তিনি আলু, মিষ্টি আলু, বেগুন, টমেটো চাষ করেছেন। ভালো পরিচর্যা করায় আবাদও ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে এক বিঘার আলু তুলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া গেছে। বাজারে দাম ভালো পেয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ জানান, কৃষকেরা যেন কৃষি পরামর্শ পেয়ে থাকেন, সে জন্যে ব্লক সুপারভাইজারদের নির্দেশনা দেওয়া আছে। নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।