ksrm-ads

১৯ মার্চ ২০২৫

ksrm-ads

নারী চিকিৎসক ও নারী জনপ্রতিনিধির পাল্টাপাল্টি লাঞ্ছনার অভিযোগ, বিচার চেয়ে মানবন্ধন

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসক ও নারী জনপ্রতিনিধি একে ওপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ তুলেছেন। এ নিয়ে মানববন্ধন করেছেন দুই পক্ষই।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছে দু’পক্ষই।

হাসপাতালের নারী চিকিৎসক ফাতেমা ইব্রাহিম মিশুর ওপর হামলার অভিযোগ এনে প্রতিবাদে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণেই বিক্ষোভ করেছেন কর্তব্যরত অন্যান্য চিকিৎসকরা।

এ সময় চিকিৎসকরা এ ঘটনায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুশিয়ারী দেন।

একইদিন বিকেল তিনটায় চিকিৎসক কর্তৃক হামলার অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন উখিয়া উপজেলার নারী ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন্নেসা বেবী ও তার স্বজনরা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সদর হাসপাতাল একটি সিন্ডিকেটের কব্জায় পরিচালিত হচ্ছে। পরিচালনার দায়িত্বে থাকা লোকজন অপরাধ কর্মে জড়িত হওয়ায় কর্মরতরা জবাবদিহিতার আওতায় নেই। এ কারণে, চিকিৎসক, নার্স ও অন্যদের হাতে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা প্রতিনিয়ত হয়রানি ও হামলার শিকার হচ্ছেন। ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

তারা আরও বলেন, উখিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন নেছা বেবী বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। জনপ্রতিনিধি ও সম্মানিত পরিবারের সদস্যদের যদি হয়রানি ও লাঞ্ছণার শিকার হতে হয়; তাহলে সাধারণ রোগীর সাথে তারা কি ধরণের আচরণ করেন তা সহজে অনুমেয়। নারী চিকিৎসক ফাতেমা ইব্রাহিম মিশুর নেতৃত্বে নারী রোগীদের বাজে আচরণে লাঞ্ছিত করা হয়ে তাকে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। অভিযুক্ত নারী চিকিৎসকসহ অপরাপর অশালীন আচরণকারিদের হাসপাতাল থেকে বিতাড়িত করে মার্জিত আচরণে অভ্যস্তদের পদায়নের দাবী জানান।

মানববন্ধনে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপক দাস, উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আমিনুল হক আমিন, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মিন্টুসহ ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী অংশ নেয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিড়ালের আঁচড় লাগায় ভ্যাকসিন দিতে গিয়ে সম্প্রতি কক্সবাজার পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড (হাসপাতাল এলাকার) কাউন্সিলর সালাউদ্দিন সেতুও ইমার্জেন্সী বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সদের কাছে লাঞ্ছিত হন বলে অভিযোগ করেন। সেদিন তিনি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্তে দেয়া বক্তব্য ভাইরাল হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ তুলে চিকিৎসক কর্তৃক লাঞ্চিত হয়েছিলেন বলে দাবী করেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন- জনপ্রতিনিধি, সমাজের উঁচু শ্রেণির লোকজনের সাথে যদি এমন আচরণ করা হয় তাহলে হাসপাতালে আসা সাধারণ রোগীরা কিভাবে লাঞ্ছিত হচ্ছেন সেটা সহজে বোঝা যায়। যদিও দরিদ্র লোকজন লাঞ্ছিত হলেও এটাকে ভাগ্য বলে মেনে নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

এসব বিষয়ে সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. মোমিনুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ক্রিটিকাল অবস্থায় এক শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও তার স্বজনরা। এসময় শিশুর বিশেষ কেয়ার ইউনিটে দায়িত্বরত নারী চিকিৎসকের সাথে তারা বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। তারা নিয়ম ভেঙে ওয়ার্ডের ভেতর ঢুকে চিকিৎসকের গায়ে হাত তুলেছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। বিচার চেয়ে চিকিৎসকরা মানববন্ধন করার পর জনপ্রতিনিধিও একইভাবে মানববন্ধন করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। এটা অনভিপ্রেত। রবিবার সকালে পরিচালনা কমিটির সভাপতি (স্থানীয় এমপি) আসবেন। তখন দু’পক্ষকে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে একেরপর এক এমন লাঞ্ছনার ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। জেলার সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানের এসব অপকান্ডের দ্রুত সমাধান চান সবাই।

আরও পড়ুন