চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা সাবেক সংসদ সদস্যদের (এমপি) শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ৩০ বিলাসবহুল গাড়ি নিলামে তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। জানা যায় আগামী ২১ জানুয়ারি দরপত্র প্রকাশের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গাড়ি গুলো ছাড়িয়ে নিতে মালিকপক্ষকে নিলামের আগে শুল্কসহ গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সাড়া পাওয়া যায়নি। এমপি থাকাকালীন শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িগুলো আমদানি করেছিলেন। সংসদ ভেঙে যাওয়ায় সেই সুবিধা আদায় করা যায়নি।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা গেছে, বন্দরের শেড খালি করতে নৌ-উপদেষ্টার চোখ রাঙানির পর নড়েচড়ে বসে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। শেডে সাবেক ৩০ এমপির গাড়িসহ ১০৩টি গাড়ি ইনভেন্ট্রির পর আইননুযায়ী আমদানিকারকদের নোটিশ দেয় কাস্টমস। এর মধ্যে ৩১টি গাড়ি শুল্ক দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যান আমদানিকারকরা। সবশেষে ৩০ এমপির গাড়িসহ ৭২টি গাড়ি ইনভেন্ট্রির পর দর নির্ধারণে শুল্কায়ন শাখায় পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কাস্টমস নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার সাকিব হোসেন বলেন, ‘৩০ এমপির গাড়িসহ সবমিলিয়ে ৭২টি গাড়ির দর নির্ধারণে শুল্কায়ন শাখায় পাঠানো হয়েছে। দর নির্ধারণ হলে ২১ জানুয়ারি নিলামের দরপত্র ছাড়া হবে।’
তড়িঘড়ি করে ৩১ গাড়ি ছাড় বন্দরে পড়ে থাকা গাড়িগুলো নিলামে তোলার প্রক্রিয়া শুরুর পর তড়িঘড়ি করে ৩১ গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়েছেন আমদানিকারকেরা। কাস্টমসের নোটিশের পর শুল্ক পরিশোধ করে গাড়িগুলো ছাড়িয়ে নেন তারা। তবে সাবেক কোন সংসদ সদস্য গাড়ি ছাড় করেননি।
নিলাম প্রক্রিয়ায় যাওয়ার পর তড়িঘড়ি করে গাড়ি ছাড়িয়ে নেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সহ-সভাপতি ও মেসার্স হাবিব এন্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী ড. হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘অনেক সময় গাড়ি এলেও কাগজপত্র এসে পৌঁছে না। আবার ডকুমেন্ট এলে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সে সময় লাগে। এসব কারণে মূলত গাড়ি ছাড়াতে দেরি হয়। পরে সবকিছু হাতে পেলে আমদানিকারকরা ফাইন ও ট্যাক্স দিয়ে গাড়ি নিয়ে যায়।’
শুধু কাগজপত্রের অভাবে গাড়ি ছাড়াতে দেরি হয় এমনটা নয় জানিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. এয়াকুব চৌধুরী বলেন, ‘আমদানিকারকদের কাগজপত্রের ঝামেলার কারণে অনেক সময় তারা নিতে পারে না। এছাড়া মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় দেরি হয়। মামলাগুলো করা হয় কাস্টমসের বিরুদ্ধে। এতে কাস্টমসের ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার (ক্ষমতা) আছে। আইন শাখা আছে। উনারা এ বিষয়ে আন্তরিকভাবে ফলোআপ করলে জট সৃষ্টি হয় না।’