দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর নেতৃত্বহীন চট্টগ্রাম চেম্বার। কার্যক্রম চলছে প্রশাসক দিয়ে। অধিকাংশ ব্যবসায়ী আড়ালে থাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ হবে না মেলায়। চলমান রাজনৈতিক সংকটে এবছর মেলা আয়োজন থেকে বিরত রয়েছে চট্টগ্রাম চেম্বারে অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।
সর্বশেষ মেলায় ২০টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ৫৬টি প্রিমিয়ার স্টল, ১৪টি গোল্ড স্টল, ৪৮টি মেগা স্টল, ১১টি ফুড স্টল, তিনটি আলাদা জোন নিয়ে ৪০০টি স্টলে তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। এই মেলায় শুধু দেশীয় প্রতিষ্ঠান নই, নিজস্ব পণ্য নিয়ে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশ যেমন-ভারত, থাইল্যান্ড ও ইরান বিভিন্ন স্টলের মাধ্যমে তাদের পণ্য প্রদর্শন করেছিল। নতুন সংযোজন হিসেবে শিশুদের বিনোদনের জন্য মাঠের দক্ষিণ পার্শ্বে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছিল। মেলা শুধু বাণিজ্যের স্থান নয় এটা নগর জীবনে একে অন্যের সঙ্গে মেলবন্ধনের একটি সুযোগ। তাই বসার সুবিধাসহ ফোয়ারা সমৃদ্ধ ১২ হাজার ৩২০ বর্গফুট জুড়ে একটি ওপেন প্লাজা রাখা হয়েছিল। মেলা চলাকালীন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার মেলা পরিদর্শন করতেন। এতে সেসব দেশে পণ্যের বাজার সম্প্র্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু এবার দেখা যাবে না সেই চিরচেনা বানিজ্য মেলা।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে স্বল্প পরিসরে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামের বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছিল। সেই শুরু থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর চট্টগ্রাম চেম্বারের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা রেলওয়ের মাঠে হয়ে আসছিল। সেই সময়ের মেলায় অংশ নেয়া দেশীয় কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে এন মোহাম্মদ প্লাস্টিক, বিআরবি কেবল, হাতিলসহ অনেক প্রতিষ্ঠান এখন বিশ্বজুড়ে রপ্তানি করছে। এছাড়া গত কয়েক দশকে আরও নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রামের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, প্রতি বছর চট্টগ্রাম চেম্বার, মেট্রোপলিটন চেম্বার ও উইমেন চেম্বার যৌথ ভাবে বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে। কিন্তু এ বছর তা হচ্ছে না। এ ধরনের মেলা দেশীয় শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় নীতি নির্ধারণে সহায়ক হবে। মেলা শুধু পণ্য কেনাবেচা না, পণ্যের বৈচিত্র্যতা জ্ঞান ও পণ্য প্রদর্শন কেন্দ্র।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ও চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, এবারের চট্টগ্রাম চেম্বারের উদ্যোগে মেলা আয়োজন হবে না। আগামীতে নির্বাচিত কমিটি চেম্বার পরিচালনায় আসলে তখন উনারা মেলা আয়োজন করবে। এছাড়া আমাকে ১০ মাসের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আগামী মে মাসের শেষদিকে নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য ব্যবসায়ীদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেয়া হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এর মধ্যে ১২ হাজার সদস্য হালনাগাদ তালিকায় যুক্ত হয়েছে। আমরা ভালো একটি নির্বাচন উপহার দেব
এছাড়া বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, ও ব্যবসায়ী গড়ে তুলতে মেলারা আয়োজন করা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাধারা/এন.এস