নিজস্ব প্রতিবেদক »
জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে কোহিনুর আক্তার নামে এক নারীকে ধর্ষণ করে ব্যবসায়ী মুসা। এরপর ওই নারী ঘটনার বিস্তারিত জানায় স্বামী ইব্রাহিমকে। তাৎক্ষণিক স্ত্রী কোহিনুর আক্তারকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) ওয়ান স্টফ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে যায় স্বামী ইব্রাহিম। পরে স্বামীর পরামর্শে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মুসার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন কোহিনুর আক্তার। কিন্তু এ সবই ছিল ‘২০ হাজার টাকার কন্ট্রাক্টে’ সাজানো নাটক। যা বেরিয়ে আসে পুলিশি তদন্তে।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) ওই নারী সিএমপির বাকলিয়া থানায় এ অভিযোগ করেন। এতে অভিযুক্ত করা হয় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত স্পিডবোট মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ী মো. মুসা আলমকে।
অভিযোগে তিনি বলেন— মুসা তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর তাকে ফেলে গেলে বাসায় গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানান স্বামী ইব্রাহিমকে। তার স্বামী তাকে চমেকের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করান।
কিন্তু পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে অন্যকিছু। পুলিশ জানায়, ২০ হাজার টাকা এবং বিদেশে যাওয়ার লোভে কোহিনুর আক্তারের স্বামী ইব্রাহিম তার দুই বন্ধুর পরামর্শে ধর্ষণ মামলার নাটক সাজানো হয়।
ধর্ষণের নাটক সাজানোর কথা অকপটে স্বীকার করে কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘যাদের থেকে টাকা নিয়েছি তাদের আমি চিনি না। তারা আমার স্বামীর পরিচিত। তারা আমার স্বামীকে বলার আমার স্বামী বিষয়টি আমাকে জানায়। আমি প্রথমে না করি। কিন্তু আমার স্বামী আমাকে অভয় দিয়ে বলে কিচ্ছু হবে না। এরপর আমি রাজি হই।
এদিকে এ মিথ্যা ধর্ষণ অভিযোগের পেছনে রয়েছে ব্যবসায়ীক দ্বন্দ— এমন অভিযোগ ফাঁসানো ব্যক্তিদের। ব্যবসায়ী মুসা আলম বাংলাধারাকে বলেন, ‘যে নারীকে দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল আমি তাকে চিনিওনা। এই অভিযোগ পেয়ে থানা থেকে প্রথমে আমাকে ফোন করে। এরপর আমি থানায় যাই। এরপর তারা সবকিছু তদন্ত করে। এরপর দেখা গেল, এটা সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। ওই মহিলাও স্বীকার করেছে তা।’
তিনি আরও বলেন, ‘পতেঙ্গার স্থানীয় মাসুদ ওরফে কুত্তা মাসুদ, হারুন এবং ঈসমাইল নামে ৩ ব্যক্তি আমাকে ফাঁসাতে টাকা দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। এরা স্থানীয়দের কাছে চাঁদাবাজ হিসেবেই পরিচিত। আমি রাজনীতি করলেও সৎভাবে সী-বীচে ব্যবসা করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। যা তাদের সহ্য হচ্ছে না। আমার ভাল কাজে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আমাকে ফাঁসাতে এই কাজ করিয়েছে।’
‘আমি এর প্রতিকার চাই। এই যে আজকের যে ঘটনা… আমার ফ্যামিলি আছে, বউ-বাচ্চা আছে। এছাড়া ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় সুনাম আছে। এই ঘটনায় আমি সামাজিকভাবে হেয় হয়েছি। আইনের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। আমাকে থানা-পুলিশ যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। তারা সত্য বের করে ব্যবস্থা নিবে বলে আমার বিশ্বাস।’ যোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে বাকলিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা এ এন নুরুজ্জামান বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ করা ওই নারীর স্বামীর পরিচিত দুইজন বন্ধু ২০ হাজার টাকা এবং বিদেশে পাঠানোর লোভ দেখিয়ে এ কাজ করায়।’
তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম।
বাংলাধারা/আরএইচআর