কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কক্সবাজারের পেকুয়ায় নেজাম উদ্দিন (৩৫) নামে এক কাঠ ব্যবসায়ীকে বুকে গুলি করার পর শরীরের বিভিন্ন অংশে ৬ কোপ দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (২৪ এপ্রিল) ভোররাত ১টার দিকে উপজেলার বারবাকিয়া ইউপির পূর্ব ভারুয়াখালী এলাকায় এঘটনা ঘটে।
নিহত নেজাম উদ্দিন বারবাকিয়া পূর্ব ভারুয়াখালী এলাকার মৃত ছবির আহমদের ছেলে ও বারবাকিয়া বাজারের খুচরা কাঠ ব্যবসায়ী।
নিহত ব্যবসায়ীর স্ত্রী শামিনা আক্তার বলেন, তার মামা রহিমদাদের বসতভিটা সন্ত্রাসী কায়দায় দখল করে নেন বারবাকিয়া পাহাড়িয়াখালী এলাকার ডাকাত জাফর আলমের ছেলে ইউপি সদস্য বনের রাজা খ্যাত জাহাঙ্গীর ও তার বাহিনীর লোকজন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার প্রহৃত হয় মামার পরিবার। মামার অনুপস্থিতিতে ভাগনি জামাতা হিসাবে তার স্বামী (নিহত নেজাম) বিভিন্ন সময় সাহায্য সহযোগিতা করতো। এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর। এর জেরে বিভিন্ন সময় তাকে হত্যার হুমকি দিত। সর্বশেষ শুক্রবার দিনগত রাত ১টার দিকে তার স্বামীকে ঘর থেকে বের করে জোবাইর নামে একজন। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই জাহাঙ্গীর আলম ও তার পিতা জাফর আলমসহ তার বাহিনীর সদস্য জসিম উদ্দিন, নেজাম উদ্দিন, শফিউল আলম, গিয়াস উদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, ওসমাণ, ছাবের, হেলাল, বেলাল উদ্দিন, সাহাব উদ্দিনসহ সংঘবদ্ধ আরো বেশ কয়েকজন তাকে ঘিরে ধরে এলোপাতাড়ি গুলি করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুলির আওয়াজ শুনে তিনি ঘর থেকে বের হয়ে দেখতে পান জাহাঙ্গীর ও তার লোকজন স্বামীকে পুরো শরীরে কোপাচ্ছেন।
সন্ত্রাসীরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যাওয়ার পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় স্বামীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এলাকাবাসী জানায়, বনের রাজা খ্যাত জাহাঙ্গীর আলম ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে সালমা হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ধর্ষণসহ ৪০টির অধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতির পদটি ভাগিয়ে নেয়ায় পেকুয়ার গুটি কয়েক রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় বারবার রক্ষা পেয়ে যান ডাকাত জাহাঙ্গীর আলম। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে পুলিশও তাকে গ্রেফতার করে না। সর্বশেষ তার ও তার বাহিনীর হাতে নিরহ কাঠ ব্যবসায়ীকে প্রাণ দিতে হল। সন্ত্রাসী জাহাঙ্গীর ও তার বাহিনীর লোকজনকে দ্রুত গ্রেফতার না করলে পেকুয়ার আইনশৃঙ্খলার আরো বেশি অবনতি হবে এমন অভিমত তাদের।
পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার জানান, ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার সকালে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
বাংলধারা/এফএস/এআর