ksrm-ads

১৪ জুন ২০২৫

ksrm-ads

প্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে পেটালেন চেয়ারম্যানের ভাই

কক্সবাজার প্রতিনিধি »

কক্সবাজার সদরের পিএমখালীতে গরু ধানের কঁচি চারা খাওয়ার অভিযোগে এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে অমানবিকভাবে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতানের ভাই হায়দার আলী মিন্টুর বিরুদ্ধে।

শনিবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে পিএমখালী ইউনিয়নের উত্তর নয়াপাড়া নাপিতাপাহাড় নামক স্থানে বিলে এ ঘটনা ঘটেছে।

মারধরের শিকার প্রতিবন্ধী নুর আহম্মদ প্রকাশ গুরা মিয়া (৭০) উত্তর নয়াপাড়া গ্রামের মৃত চাঁদ মিয়ার ছেলে। তাকে আহত আবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

আহত বৃদ্ধের স্বজনরা জানান, অন্যদিনের মতো শনিবারও বাড়ির পাশের পানের বরজ দেখাশোনা করতে যান গুরা মিয়া। বেলা ১১টার দিকে তার পানের বরজের কাছে এসে পার্শ্ববতী ঝিলংজার বাংলাবাজার মুক্তারকুল এলাকার মনিরুল ইসলামের ছেলল হায়দার আলী মিন্টু অভিযোগ করেন গুরা মিয়ার গরু তাদের ধানের চারা খেয়েছে। গুরা মিয়া বিষয়টি অস্বীকার করতেই তাকে চড়-তাপ্পড় দেন। গুরা মিয়া প্রতিবাদ করায় ক্ষেপে যান মিন্টু। তার চাষের শ্রমিকদের ডেকে এনে বেদম প্রহার করান। হায়দার আলী মিন্টুর বড় ভাই টিপু সুলতান ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হওয়ায় ভয়ে বৃদ্ধকে রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি।

এলোপাতাড়ি মারধরে প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ মাটিতে পড়ে নিস্তেজ হলে সবাইকে নিয়ে চলে যান মিন্টু। পরে ঘটনা জানাজানি হলে বৃদ্ধের মেয়েরা এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। দরিদ্র বৃদ্ধকে হাসপাতালে আনার টাকাটাও এলাকাবাসী চাঁদা তুলে সরবরাহ করেছে বলে জানায় স্বজনরা।

আহত গুরা মিয়ার মেয়ে সেলিনা আকতার বলেন, ‘আমাদের কোন ভাই নেই। সবাই মেয়ে, আর বাবা পা প্রতিবন্ধী। গরু ধানের চারা খাওয়ার ধোয়া তুলে, আমাদের পানের বরজে এসে টিপু চেয়ারম্যানের ভাই মিন্টু বাবাকে কিল-ঘুষি ও জুতাসহ লাথি দিয়ে আহত করেছে। পিঠে ও বুকে ধারালো কিছু দিয়ে একে দেয়ার দাগও দেখা যাচ্ছে। আমরা অশিক্ষিত বিধায় থানা-পুলিশও চিনি না, তারউপর গরিব। এ কারণে আইনি ব্যবস্থার উদ্যোগ এখনো নিতে পারিনি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত হায়দার আলী মিন্টু ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিক বার কল করা হয়। রিং হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

তবে, ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, ‘আমার ভাই মিন্টু পিএমখালীতে খামার ও চাষাবাদ করেন। সেখানে গরু লাগিয়ে দিয়ে ধানের চারা খাইয়েছেন নুর মুহাম্মদ ওরফে গুরু মিয়া। সেটার প্রতিবাদ করায় আমার ভাইয়ের কর্মচারিকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন গুরা মিয়া। তা শোনার পর ঘটনাস্থলে গেলে মিন্টুর সাথেও বাকবিতণ্ডায় জড়ান তিনি। এরপর রাগের বশে কয়েকটি থাপ্পর দেয় মিন্টু।’ এটি নিউজ করার মতো বিষয় নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বৃদ্ধ প্রতিবন্ধী ও হাতে-পায়ে-শরীরে বেশ কয়েকটি জখমের চিহ্নের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চেয়ারম্যান টিপু বলেন, ‘পা দাবিয়ে হাটলেও গুরা মিয়া প্রতিবন্ধী নয়। তার আগে থেকেই রোগ আছে। ঘটনার পর আমি তাকে দেখে এসেছি। আমাদের প্রতিপক্ষরা তিলকে তাল করছে।’

কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, ‘এ ধরনের কোন অভিযোগ এখনো থানায় আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরও পড়ুন