ksrm-ads

২৬ এপ্রিল ২০২৫

ksrm-ads

‘প্রত্যাবাসনে ভূমিকা রাখায়’ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে হত্যা

সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার »

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন নিয়ে ক্যাম্পে ক্যাম্পে দাবী বাড়ানোয় কাল হয়েছে রোহিঙ্গা নেতা মুহিব্বুল্লাহর। একটি গ্রুপ প্রত্যাবাসন বিরোধী ছিল- সেই সন্ত্রাসী গ্রুপই মুহিবুল্লাহকে তার অফিসে এসেই হত্যা করেছে।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে আদালতে দেয়া সাক্ষে এভাবেই দাবী করেন মুহিব্বুল্লাহ হত্যা মামলার বাদী ও সাক্ষী মুহিব্বুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবউল্লাহ।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুনের আদালতে তিনি সাক্ষ্য প্রদান করেন বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।

পিপি জানান, বাদি ও নিহতের ভাইয়ের সাক্ষ্য প্রদানের মধ্য দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হল। মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) একই আদালতে আরও ৩ জন সাক্ষীকে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আনা হবে। এর আগে গত ১১ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন মামলায় সাক্ষিরা আদালতে হাজির না হওয়ায় সোমবার (৩১ অক্টোবর) পরবর্তী দিন ধার্য্য করেছিলেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী আরও জানান, আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৪ আসামিকে আদালতে আনা হয়। তাদের উপস্থিতিতে নেয়া হয় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার বাদি আদালতে জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে বাস্ত্যুচুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জোরালোভাবে ভূমিকা পালন করায় সন্ত্রাসীদের এক গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে তাঁর ভাইকে হত্যা করেছে। রোহিঙ্গারা যাতে দ্রুত তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে এ জন্য তিনি ক্যাম্পে ক্যাম্পে জোরালো মত সৃষ্টি করছিলেন। রোহিঙ্গাদের দ্রুত স্বদেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও নানা দাবি তুলেছিলেন তিনি।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ)’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া-১ ইস্ট নম্বর ক্যাম্পের ডি ব্লকে নিজ সংগঠনের কার্যালয়ে মুখোশধারী বন্দুকদারিদের গুলিতে নিহত হন। হত্যাকান্ডের পরদিন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ সাড়ে আট মাস তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উখিয়া থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দীন ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এতে সাত জনের নাম ঠিকানা সঠিক পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য আবেদন জানান তদন্তকারি কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে ৩৮ জনের নাম ও ঠিকানা সাক্ষীর তালিকায় রয়েছে। আদালত শুনানী শেষে ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ জন আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন। ওইদিন আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১১ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য ছিল।

বর্তমানে মুহিবুল্লাহ’র পরিবারের ২৫ জন সদস্য কানাডায় স্থানান্তরিত হয়েছেন। প্রথম দফায় ৩১ মার্চ স্ত্রীসহ ১১ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কানাডা পাড়ি জমান জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক সংস্থার সহায়তায়।

এরপরও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হত্যার ঘটনা কমছে না। বরং এ তালিকা দিনকে দিন দীর্ঘ হচ্ছে। যা স্থানীয়সহ সকল মহলের মাঝে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে।

আরও পড়ুন