চট্টগ্রামের রাউজানের এক প্রবাসীর বাড়ি থেকে ৫৫ ভরি সোনা চুরি করে চম্পট দেন ৪ সদস্যের একটি চোরচক্র। সোনা বিক্রির সে টাকায় কেউ দিয়েছেন কুরবানি আবার কেউ কিনেছেন মোটরসাইকেল। চুরির ঘটনায় প্রবাসী আব্দুল কাদের জুন মাসের ৯ তারিখ রাউজান থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করলে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায় চোরচক্রের সদস্যরা। পরবর্তীতে মামলাটির ছায়া তদন্তে নেমে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহয়তায় চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী, হাটহাজারী ও মিরসরাই থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতার করলে বেরিয়ে আসে এমন সব তথ্য।
আটককৃতরা হলো— নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. হেলাল উদ্দিন(৪৩), নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার বাট্টাম বশু মাস্টারের বাড়ির মৃত শাহ আলমের ছেলে মো. সালাউদ্দিন (৩৪), চট্টগ্রাম জেলার সন্দীপ উপজেলার ৩ নম্বর ওয়ার্ড ধোঁপারহাট এলাকার মৃত ডাঃ রফিকুল মওলার ছেলে মো. সোহাগ (৩৮) ও নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণ হাতিয়া চরচেংগা এলাকার মৃত আবুল কালামের ছেলে মো. আবুল কাশেম প্রকাশ বাচা (৩২)।
বুধবার (২ আগস্ট) পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, গত জুন মাসের ৮ তারিখ প্রবাসীর বাড়িতে চুরি হলে প্রবাসী আব্দুল কাদের বাদি হয়ে পরদিন রাউজান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে আদালত রাউজান থানায় করা চুরির মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দিলে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল আব্বাসের নেতৃত্বে একটি টিম ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে তদন্তভার নেওয়ার ১০ দিনের মাথায় জড়িত আসামিদের গ্রেফতার করতে আমরা সক্ষম হই। এসময় তাদের কাছ থেকে ৫৫ ভরি সোনা, ৭টি হাতঘড়ি, ১টি ল্যাপটপ, ৪টি মোবাইল, ২টি ট্যাব, ৩টি ক্যামেরা ও একটি সিসি ক্যামেরা, চোরাইকৃত টাকা দিয়ে কেনা ১টি মোটরসাইকেলসহ চুরির কাজে ব্যবহৃত সিএনজি ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তারা জানায়, চুরাইকৃত সোনা ও অন্যান্য মালামাল বিক্রি করে তাদের কেউ কুরবানী ঈদ পালন করে আবার কেউ মোটরসাইকেল কিনে নেয়।
এদিকে মামলার বাদি ভুক্তভোগী প্রবাসী মো. আব্দুল কাদের জানান, প্রবাসে থেকে ৩২ বছরের অর্জিত সম্পদ রেখে প্রথমবারের মতো বাড়ি খালি রেখে বেড়াতে যান। সেইদিন বৃহস্পতিবার বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ বুঝে চোরেরা আমার সমস্ত সম্পদ লুটপাট করে নিয়ে যায়। এরপরেরদিন শুক্রবার রাউজান থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করি। এখন আমার সব সম্পদ ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয় পিবিআই।