বাংলাধারা প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা থেকে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৭ এর সদস্যরা। এ ঘটনায় মূল অপহরণকারী মোদাসসির এবং তার মা-বাবাকে আটক করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পতেঙ্গা থানার নাজিরপাড়া এলাকার একটি বাসা হতে তাকে উদ্ধার করা হয়।
আটক তিনজন হলেন, বাঁশখালী থানার ছনুয়া এলাকার মো. মোদাসসির (২৫), তার বাবা রেজাউল করিম (৫৩) এবং মা সাবিহা সুলতানা (৪৫)।
র্যাব জানায়, অপহৃত কিশোরির বয়স ১৫ বছর। সে নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রী। আসামি মোদাসসির বিভিন্ন সময়ে তাকে মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিত এবং বিরক্ত করত। ভিকটিম বিষয়টি তার মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে জানায়। ভিকটিমের বাবা প্রবাসী হওয়ায় অভিভাবক হিসাবে ভিকটিমের মা তার মেয়েকে বিরক্ত না করার জন্য মোদাসসিরকে অনুরোধ করেন। ভিকটিমের মা ও তার পরিবারের লোকজন লোক লজ্জার ভয়ে এ বিষয়ে আর কোন স্থানীয় সালিশ বিচার না করে তার মেয়েকে নিজ দায়িত্বে মাদ্রাসায় যাতায়াত করতে দিত।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাত অনুমান ৯টার দিকে ভিকটিমদের বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় ভিকটিম ঘর হতে বের হয়ে উঠানে যায়। তারপর থেকে ভিকটিম ঘরে না আসায় তার মা ও তার পরিবারের লোকজন আশ-পাশে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে পরদিন ভিকটিমের মা হাটহাজারী মডেল থানায় নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি জিডি করেন।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বলেন, ‘ভিকটিমের মা ভিকটিমকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে জানতে পারেন যে, নিখোঁজ হওয়ার রাতে ঘর হতে বের হয়ে উঠানে পায়চারি করার সময় হঠাৎ আসামি মোদাসসির অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের সহযোগিতায় তার মেয়েকে জোরপূর্বক রাস্তার উপর নিয়ে একটি সিএনজি গাড়িতে করে অপহরণ করে। বিষয়টি জানার পর ভিকটিমের মা মোদাসসিরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ফোন করে তার মেয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আসামি তার মেয়েকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় বলেও স্বীকার করে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় ভিকটিমের মা আসামি মোদাসসির এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩জনকে আসামি করে হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।’
তিনি বলেন, ‘ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরনের সাথে জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখি আমরা। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে পতেঙ্গা থানার নাজিরপাড়া এলাকার একটি বাসা হতে ভিকটিমকে উদ্ধারসহ মূলহোতাকে আটক করতে সক্ষম হই। এছাড়াও এ কাজে সহায়তা করায় আরও দুইজনকে আমরা ঘটনাস্থল থেকে আটক করি।’
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘মোদাসসির এবং তার মা ও বাবা স্বীকার করে ১৯ সেপ্টেম্বর ভিকটিমকে অপহরণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেছিল। গত ৩ তারিখে তারা কক্সবাজার হতে বাস যোগে এসে পতেঙ্গা থানার নাজিরপাড়া এলাকায় একটি বাসায় আত্মগোপন করেছিল এবং ৪ তারিখে ওই বাসা হতে অপহৃত ভিকটিমকে নিয়ে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করার পরিকল্পনা করছিল।’
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছ বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।