ksrm-ads

১৫ মার্চ ২০২৫

ksrm-ads

ফটিকছড়িতে অবৈধ করাতকলের ছড়াছড়ি, নীরব বন বিভাগ-প্রশাসন

ফটিকছড়িতে

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে প্রশাসনের নাকের ডগায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অবৈধ করাতকল। যত্রতত্র লাইসেন্সবিহীন করাতকল গড়ে উঠায় রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। গাছ কেটে সাবাড় করায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ। তবে নিয়ম মেনেই করাতকলগুলোর লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। অধিকাংশ করাতকল পরিচালকরা বলছে বন বিভাগের লাইসেন্স আছে তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের ৫টি রেঞ্জের ফটিকছড়ি উপজেলাধীন ১১টি বন বিটের ভেতরেই বেশিরভাগ করাতকলগুলো বসানো আছে। করাতকলের ৩০০-৪০০ গজ এলাকাজুড়ে সেগুন,গামারি,গর্জন,আকাশমণি,বেলজিয়াম,মেহগুনী,কাঁঠালসহ ফলজ ও বনজ গাছের স্তূপ। একেকটি করাতকলে প্রায় ১০-১২ হাজার ঘনফুট পর্যন্ত কাঠ মজুদ রয়েছে। রাত-দিন ইচ্ছেমতো চলছে কাঠ চিরাই। রাত হলে ট্রাক,পিকআপ ও জিপ গাড়ী ভরে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হয় এসব চিরাই কাঠ।

করাতকল বিধিমালা-২০১২ তে বলা আছে, কোনো সরকারি অফিস-আদালত,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,হাসপাতাল,স্বাস্থ্যকেন্দ্র,ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান,বিনোদন পার্ক,উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে এমন স্থান থেকে কমপক্ষে ২০০ মিটার এবং সরকারি বনভূমির সীমানা থেকে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন করা যাবে না। এই নির্দেশনা থাকলেও মানছে না অধিকাংশ করাতকল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন কর্মচারী জানান, করাতকলের লাইসেন্স না থাকলেও স্থানীয় বনবিট ও বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট পৌঁছে যায় মাসোহারা। নতুন করাতকল বসাতে হলে স্যারদের (বন কর্মকর্তা) মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে খুশি করতে হয়।

উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, বাস্তবে মোট কয়টি করাতকল আছে তার কোনো সঠিক হিসাব জানা নেই। তবে প্রতিদিনই বাড়ছে অবৈধ করাতকলের সংখ্যা। আমার জানামতে সংরক্ষিত বনাঞ্চলেই রয়েছে দুই শতাধিক করাতকল। যার বেশিরভাগ চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সম্পূর্ণ ভেতরে গড়ে উঠেছে।

একজন করাতকল মালিক জানান, বন বিভাগের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল বসানো যাবে না মর্মে গেজেটের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে উচ্চ আদালতে রিট মামলা করে এখনো চলছি। তবে তিনি এই মামলার সর্বশেষ কি অবস্থা এবং করাতকলগুলোর লাইসেন্স নবায়ন সর্বশেষ কখন হয়েছে তা জানাতে পারেননি।

নারায়নহাট রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, আমার রেঞ্জের আওতায় করাতকল রয়েছে ৬৬ টি। তারমধ্যে বৈধ ৫টি,বাকী সব অবৈধ। কিছু করাতকল মালিক উচ্চ আদালতে মামলা করে রেখেছে। বিভিন্ন সময় আমরা অভিযান চালাতে গেলে রিট মামলার দোহাই দিয়ে তারা পার পাওয়ার চেষ্টা করে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, অবৈধ করাতকল বন্ধে বন বিভাগ সহযোগিতা চাইলে আমরা করব। তবে গত এক বছরে তারা উপজেলা প্রশাসনের সহায়তা চায়নি

আরও পড়ুন