৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ফটিকছড়িতে মায়ের পরকীয়া: প্রেমিকের সঙ্গে মিলে একমাত্র ছেলেকে হত্যা

স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে বহুদিন ধরেই সন্দেহ ছিল প্রবাসী স্বামীর

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে মায়ের পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে মিলে একমাত্র ছেলেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে উপজেলার ভূজপুর থানার নারায়ণহাট ইউনিয়নের ইদিলপুর বাউদ্দারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকের নাম কামরুল হাসান কাউসার (২০)। তিনি প্রবাসী কামাল ভূঁইয়া প্রকাশ মনা’র একমাত্র ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের নানী ফরিদা বেগম বাদী হয়ে ভূজপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ ইতোমধ্যে কাউসারের মা হামিদা বেগমকে আটক করেছে, আর মূল আসামি সিএনজি চালক মো. করিম এখনো পলাতক।

পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাতে (৫ অক্টোবর) কাউসারের বোনরা নানার বাড়ি বেড়াতে যায়। সেদিন রাতে ঘরে না থাকার কথা বললেও, পরে ঘরেই থেকে যায় কাউসার। গভীর রাতে মা হামিদা বেগমকে প্রেমিক করিমের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে সে। এ সময় ক্ষুব্ধ হয়ে মা-ছেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, এরপর মা ও প্রেমিক মিলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করে তাকে হত্যা করে।

সোমবার সকালে ঘর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় কাউসারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পোড়ার চিহ্ন পাওয়া যায়।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে হামিদা বেগমের সঙ্গে করিমের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। করিম ভূজপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ভূজপুর গ্রামের মৃত আইয়ুব মাঝির ছেলে এবং দুই সন্তানের জনক।

নিহতের নানী ফরিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন,
“ভোরে করিম এসে বলে, কাউসার অসুস্থ। ঘরে গিয়ে দেখি নাতি মশারির ভেতর ঢেকে রাখা। শরীরে বিদ্যুতের পোড়া দাগ ছিল। আমার মেয়ে হামিদা করিমের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। নাতি এর প্রতিবাদ করায় তাকেই মেরে ফেলেছে। আমি হামিদা ও করিমের ফাঁসি চাই।”

প্রবাসী বাবা কামাল ভূঁইয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“২১ বছর ধরে প্রবাসে আছি। করোনার সময় দেশে এলে স্ত্রীকে করিমের সঙ্গে দেখেছিলাম। জিজ্ঞেস করলে স্ত্রী বলেছিল, সে নাকি আত্মীয়। আজ বুঝলাম, সে-ই আমার ছেলের ঘাতক। আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শতাধিক মানুষ জড়ো হয়ে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানায়। স্থানীয়দের প্রশ্ন, “একজন মা কীভাবে নিজের সন্তানকে হত্যা করতে পারে?”

ভূজপুর থানার ওসি মো. মাহাবুবুল আলম বলেন,
“সাক্ষ্য-প্রমাণে আমরা নিশ্চিত হয়েছি পরকীয়া সম্পর্কের কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হামিদা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পলাতক করিমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

আরও পড়ুন