ksrm-ads

২ ডিসেম্বর ২০২৪

ksrm-ads

🔻প্রশাসনিক কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ

ফরিদা খানম: জেলা প্রশাসনের ইতিহাসে চট্টগ্রামে প্রথম নারীর পদচিহ্ন

অফিসে কাজের পদ্ধতি বদলে দিয়ে কিভাবে দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে লড়াই করা যায় সেটির উদাহরণ রাখতে চান চট্টগ্রামের প্রথম নারী জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। ২৫২ বছরের চট্টগ্রামের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নারী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বরে ঐতিহাসিক নিয়োগের মাধ্যমে তিনি চট্টগ্রামের প্রশাসনিক কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ করেন।

১৭৭২ সালে চট্টগ্রামে প্রথম জেলা কালেক্টর অফিস প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন থেকে এখন পর্যন্ত ১৯০ জন জেলা প্রশাসক দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু ব্রিটিশ শাসন, পাকিস্তান আমল বা স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে চট্টগ্রামে কোনো নারী জেলা প্রশাসক নিয়োগ পাননি। এই প্রথম, ফরিদা খানম এই দায়িত্ব পেয়ে ইতিহাস গড়লেন।

নেতৃত্বে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি:

ফরিদা খানম তার দায়িত্বকে কেবল পেশাগত চ্যালেঞ্জ নয়, বরং মানবতার জন্য কাজ করার সুযোগ হিসেবে দেখছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বলেন, “মানুষের জন্য এমন কিছু করতে চাই, যা আগামী শত বছর পরেও চট্টগ্রামের মানুষ শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করবে।”

দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে জনকল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার উদ্যোগ নিয়েছেন। রুটিন কাজের বাইরে গিয়ে জনগণের সমস্যা দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে তিনি মাসে একদিন বিশেষ গণশুনানির আয়োজন করার পরিকল্পনা করেছেন।

দুর্নীতি ও মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকার:

ফরিদা খানম দুর্নীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে তার দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “সততার সঙ্গে কাজ করব এবং যেখানে অন্যায় দেখব, সেখানেই হস্তক্ষেপ করব।” বাবার শিক্ষাকে স্মরণ করে তিনি জানান, তার জীবনের মূলমন্ত্র হলো সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে জনসেবা করা।

ব্যক্তিগত জীবন ও কর্মজীবন:

ফরিদা খানম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ২৫তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা। কর্মজীবনে তিনি রংপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, শরীয়তপুর, এবং ফেনীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন পুত্রসন্তানের মা। তার স্বামী জহুরুল ইসলাম একজন সফল ব্যবসায়ী এবং তার বাবা ছিলেন একজন সম্মানিত শিক্ষক।

চট্টগ্রামের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি:

চট্টগ্রামের সংস্কৃতি এবং কৃষ্টিকে তুলে ধরে তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের মানুষের হৃদয় অনেক বড়। সবাই যদি একত্রে কাজ করি, তবে চট্টগ্রামকে আধুনিক নগরীতে পরিণত করা সম্ভব।”

এই ঐতিহাসিক নিয়োগ চট্টগ্রামের জন্য যেমন একটি গর্বের বিষয়, তেমনি ফরিদা খানমের নেতৃত্ব প্রশাসনে নারীর অবদানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন