ksrm-ads

২২ মার্চ ২০২৫

ksrm-ads

ফের সক্রিয় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা, পটিয়ায় গুলি করে কৃষক হত্যা

গিয়াস উদ্দিন, পটিয়া »

চট্টগ্রামের পটিয়ায় একের পর এক অপহরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। অপহরণ করার পর চাহিদা মতো মুক্তিপণ না দিলে হত্যার ঘটনাও ঘটাচ্ছে। ফলে পাহাড়ি এলাকায় প্রতিনিয়ত অপহরণ আতঙ্কে বসবাস করছে হাজার হাজার মানুষ। অনেকে আবার ঘরবাড়ি বিক্রি করে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র।

উপজেলার পাহাড় বেষ্টিত এলাকা কেলিশহর, খরনা, কচুয়াই ইউনিয়ন থেকে গত দুই বছরে প্রায় ১৫০ জন মানুষকে অপহরণ করে নিয়ে বেদড়ক মারধর, নির্যাতন ও মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও গত ৫ বছরে মুক্তিপণসহ সন্ত্রাসীদের পরিচয় জেনে যাওয়ায় ১৫ জন খুন হয়েছে। বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসীদের ধরতে র‌্যাব, আর্মি, পুলিশ যৌথভাবে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকালে পাহাড়ের পাদদেশে নিজের জমিতে চাষ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আনু মিয়া (৪২) নামের এক কৃষক খুন হয়েছেন। নিহত আনু মিয়া উপজেলার খরনা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ফকিরপাড়া গ্রামের মৃত কালা মিয়ার পুত্র।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে আনু মিয়াসহ তারা কয়েকজন পাহাড়ে নিজেদের বেগুন ক্ষেতে যান। সকাল ১০টার দিকে একদল পাহাড়ি সন্ত্রাসী বেগুন ক্ষেতের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা আনু মিয়াকে দুইটি গুলি করে। পাশের ক্ষেতে কাজ করা অন্য কৃষকরা গুলির বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তার ভাই আব্দুর রহিমসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে তাকে চমেকে রেফার্ড করে দেন সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। চমেকে নিয়ে যাওয়ার পথে আমজুর হাট এলাকায় আনু মিয়া শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারী থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে পটিয়া সীমান্তে পাহাড়ি সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠে। উপজেলার কেলিশহর বোয়ালখাী সীমান্ত, হাইদগাঁও, শ্রীমাই, বুদবুদি ছড়া, রাঙ্গুনিয়ার কমলছড়ি, ক্রুশিয়া, বেনিপাড়া, ছীপছড়িপাড়া, ডলুছড়িসহ পাহাড় বেষ্টিত সব এলাকায় প্রায় সময় শান্তি বাহিনী বা সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেন। বন মালিক ও কর্মচারীকে টার্গেট করে প্রথমে মোবাইল ফোনে চাঁদাদাবি করে। চাঁদা না দিলে পরে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় বাগান মালিক বা বাগানে কাজ করা কর্মচারীদের অপহরণ করে নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হয়। মুক্তিপণ দিতে না পারলে কেউ কেউ আবার খুনের শিকার হচ্ছেন।

পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার জানান, আনু মিয়া নামের এক কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। তাকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

তিনি আরও জানান, পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের থেকে স্থানীয়দের নিরাপদ রাখতে বিভিন্ন সময় আমরা যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছি। প্রশাসন সবসময় তৎপর রয়েছে। স্থানীয় যে সকল মদব্যবসায়ীরা পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা করছে তাদের তালিকা ইতোমধ্যে করা হয়েছে।

আরও পড়ুন