ksrm-ads

১৭ মে ২০২৫

ksrm-ads

বকশিশ অভিযোগ উড়িয়ে ওয়ার্ডবয়ের পক্ষে চমেকের সাফাই?

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রবিবার (১৬ মার্চ) তিন সদস্যের এই কমিটিকে চার কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের পর অভিযুক্ত অপর্না নামের এক আয়াকে তাৎক্ষণিকভাবে ওয়ার্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শনিবার এক ওয়ার্ডবয়কে বকশিশ না দেওয়ায় অক্সিজেনের পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে নবজাতকটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তবে হাসপাতালের নিওনেটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মোহাম্মদ শাহীন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, শিশুটি জন্মের পর থেকেই একাধিক শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত ছিল। যদিও ওই বিবৃতিতে বকশিশ-সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

তদন্ত কমিটি গঠন তদন্ত কমিটিতে শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মোহাম্মদ মুছা মিঞাকে সভাপতি, মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রবিউল আলম মো. এরফান উদ্দীনকে সদস্য এবং অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শুভাশীষ তালুকদারকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়া, তদন্তের সাচিবিক কাজে সহযোগিতা করতে মেডিকেল টেকনিশিয়ান (ইসিজি) অসীম কান্তি নাথকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনা জানার পরপরই এক আয়াকে ওয়ার্ড থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তদন্তের জন্য নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো গাফিলতি প্রমাণিত হলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

নবজাতকের শারীরিক অবস্থা হাসপাতালের বিবৃতিতে জানানো হয়, মোসাম্মৎ মহসিনা গত ৭ মার্চ চকরিয়ার জমজম ক্লিনিকে একটি ছেলে শিশুর জন্ম দেন। জন্মের সময় শিশুটি মায়ের গর্ভেই মেকোনিয়াম (পায়খানা) করে ফেলে, যার ফলে সে শ্বাসকষ্টে ভুগছিল এবং কান্না করছিল না। জমজম ক্লিনিকে সংকটাপন্ন অবস্থায় দুদিন থাকার পর শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেলের নবজাতক আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার ফলে তার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়।

চমেকের নবজাতক ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নাহিদা বলেন, ‘ভর্তির পর নবজাতকের Gasping ছিল এবং তার সারা শরীরে SCLEREMA দেখা দেয়। CPAP ডিভাইসের মাধ্যমে সর্বোচ্চ মাত্রায় অক্সিজেন দেওয়ার পরও অক্সিজেন স্যাচুরেশন মেইনটেইন হচ্ছিল না, তাই লাইফ সাপোর্টের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে শিশুর বাবা-মাকে কাউন্সেলিং করা হয়। তবে তারা লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার সম্মতি দেননি।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শিশুটি “Term (38 weeks) AGA (2800gm), PNA (HIE Stage III, MAS), Septic Shock (Sclerema)” রোগে আক্রান্ত ছিল। চিকিৎসার অংশ হিসেবে তাকে বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ দেওয়া হয়। ১৫ মার্চ সকাল ১০টায় শিশুটির শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে Inj Adrenaline দেওয়া হয় এবং পুনরায় লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার জন্য বাবা-মাকে পরামর্শ দেওয়া হয়। হাসপাতালের নথি ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নবজাতকটি জন্মগত শ্বাসকষ্ট ও মেকোনিয়াম অ্যাসপিরেশন সিন্ড্রোমের জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেছে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এআরই/বাংলাধারা

আরও পড়ুন