ksrm-ads

২২ মার্চ ২০২৫

ksrm-ads

বন্দরে ফের নিলামে ৭৯ বিলাসবহুল গাড়ি

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা বিলাসবহুল ৭৯টি গাড়ি আবার নিলামে তুলছে কাস্টম হাউজ। কাস্টমসের পক্ষ থেকে এসব গাড়ির মোট বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা। ৪১ লাখ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের গাড়ি রয়েছে নিলামে। এসব গাড়ি বিদেশে থেকে ‘কারনেট ডি প্যাসেজ’ সুবিধায় দেশে আনার পর আর খালাস নেওয়া হয়নি। এর আগে ছয়বার নিলাম ডেকেও প্রত্যাশিত দাম না পাওয়ায় গাড়িগুলো বিক্রি করতে পারেনি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

ই-অকশনে দরপত্র দাখিলের সময় শুরু হয়েছে ২২ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে, চলবে আজ রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত। একই দিন বিকাল ৫টায় নিলামের বক্স খোলা হবে এবং দরদাতাদের দাখিলকৃত মূল্যের তালিকা তৈরি করা হবে। পরে সর্বোচ্চ দরদাতাদের তালিকা ঘোষণা করবে কাস্টমস।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে এবার সপ্তমবারের মতো গাড়ি নিলামের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাস্টমসের পক্ষ থেকে এসব গাড়ির মোট বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৩০ কোটি টাকা। সর্বনিম্ন ৪১ লাখ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের গাড়ি রয়েছে নিলামে। আগে আশানুরূপ দাম না পেলেও এবার ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেননা, পুরনো গাড়িগুলো খালাস নিতে আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র (ক্লিয়ারেন্স পারমিট বা সিপি) নিতে হতো ক্রেতাদের। পুরোনো গাড়ির ছাড়পত্র মিলবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় অনেকেই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও নিলামে অংশ নিতেন না। তবে এখন আর সেই বাধা নেই। কাস্টমস নিজ উদ্যোগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আগেই গাড়িগুলোর ছাড়পত্র নিয়ে রেখেছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপকমিশনার মাহফুজ আলম জানান, কাস্টম হাউজ নিজস্ব উদ্যোগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গাড়িগুলোর সিপি সংগ্রহ করেছে। তাই ক্রেতাকে আর সিপি নিতে হবে না।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ সূত্র জানায়, নিলামে তোলা গাড়ির সবই বিশ্বের বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের। এর মধ্যে রয়েছে বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ-বেঞ্জ, ল্যান্ড ক্রুজার, ল্যান্ড রোভার, জাগুয়ার, লেক্সাস ও মিতসুবিশি। ৪ কোটি টাকা দামের গাড়ি রয়েছে তিনটি। এগুলো হলো যুক্তরাজ্যের তৈরি ল্যান্ড রোভার রেঞ্জ রোভার স্পোর্ট টিডি, তৈরির সাল ২০০৩। গাড়িটির মূল্য ৪ কোটি ৫ লাখ টাকা। একই দামের ল্যান্ড রোভার রেঞ্জ রোভার ভি-৮, তৈরি সাল ২০০৩। ল্যান্ড রোভার আর রোভার ভি-৮, তৈরি সাল ২০০৫, মূল্য ৪ কোটি ৩০ লাখ। এছাড়া ৩ কোটি টাকা দামের ৬টি, ২ কোটি টাকা দামের ৭টি, ১ কোটি থেকে ২ কোটি টাকার নিচে ৪৩টি গাড়ি রয়েছে। পর্যটন সুবিধায় এক দশক আগে এসব গাড়ি এনেছিলেন পর্যটকরা। ব্যাংক গ্যারান্টি দিয়ে খালাসের শর্তারোপ করার পর আর খালাস নেননি তারা। সেই থেকে বন্দরে পড়ে রয়েছে। দামি এবং বিলাসবহুল হলেও কোনো কোনোটি দীর্ঘদিন খোলা ও কনটেইনারের ভেতরে বদ্ধ অবস্থায় থাকায় যন্ত্রাংশ অকেজো হয়ে পড়েছে। কয়েকটি গাড়ির চাবি নেই। কোনো কোনোটার টায়ার, চাকা ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ নষ্ট। খুচরা যন্ত্রাংশের অপ্রতুলতা এবং কেনার পর চলাচল উপযোগী করা সম্ভব হবে কিনা, এসব বিষয়ে সংশয়ে থাকায় ক্রেতারা বিলাসবহুল এসব গাড়ি কিনতে তেমন একটা আগ্রহী হচ্ছেন না বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এ কারণে বারবার নিলামে তুলেও আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছে না কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। গত জুনে অনুষ্ঠিত নিলামে ১০৮টি গাড়ি বিক্রির জন্য রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে ৩৪টি বিক্রি হলেও ৭৪টি অবিক্রীত থেকে যায়। এই ৭৪টিসহ বর্তমানে মোট ৭৯টির জন্য পুনরায় নিলাম ডাকা হলো। গত নিলামে ৩৪টি গাড়ি বিক্রি হয়েছে মূসক অগ্রিম আয়করসহ সব মিলিয়ে ১০ কোটি ৯০ লাখ টাকায়। গড়ে প্রতিটি গাড়ি বিক্রি হয়েছে ৩২ লাখ টাকায়। ওই নিলামে ২০০৫ সালে তৈরি একটি রেঞ্জ রোভার গাড়ি বিক্রি হয়েছিল সর্বোচ্চ ৭২ লাখ টাকায়।

বাংলাধারা/এসআরটি

আরও পড়ুন