বাঁশখালী প্রতিনিধি »
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার শিলকূপ ইউনিয়নে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১ বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এসময় অগ্নিকাণ্ডে ১৮ পরিবারের নগদ টাকাসহ আনুমানিক ৫০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া ১১ বসতঘরের ১৮টি পরিবারের সদস্যরা এখন খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন। তবে এই অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার শিলকুপ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পূর্ব-মনকিচর মোহাব্বত আলী পাড়ার হরন্নিছা বাপের বাড়িতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ওই বাড়ির আলমের রান্নাঘরের লাকড়ির চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে পার্শ্ববর্তী থাকা আরও ১০টি বসতঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন— ফজল কাদের, আব্দুল মালেক, আব্দুল মোনাফ, আলমগীর, জাহাঙ্গির আলম, আব্দুল জলিল, লেদু মিয়া, জাকের উল্লাহ্, শফি উল্লাহ্, আনু মিয়া, সুফি আলম, মাহাবুব আলম, ইছহাক, মুহাম্মদ আক্কাস, মুহাম্মদ হারুণ, মমতাজ বেগম ও ইসলাম মিয়া।
বাঁশখালী ফায়ার সার্ভিসের অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রহিম বলেন, দুপুর ১টার দিকে বাঁশখালী উপজেলার শিলকুপ ইউনিয়নের মোহাব্বত আলী পাড়ার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর পাই। খবর পেয়ে দ্রুত আমাদের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আধঘণ্টার মধ্যেই আমাদের ফায়ার টিম ও এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থ কাছাকাছি ও দূরত্ব কম হওয়ায় আমরা দ্রুত পৌঁছাতে পারি। না হয় আরও বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটতো। তবে আগুনে ক্ষতিগ্রস্তরা ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দাবি করলেও ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদুজ্জামান চৌধুরী, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসিন।
এসময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবার প্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এসময় ইউপি চেয়ারম্যানও নিজস্ব তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে নগদ ২১ হাজার টাকা প্রদান করেন।

শিলকুপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মহসিন বলেন, দুপুর ১টার দিকে পূর্ব-মনকিচর ৮নং ওয়ার্ডের মোহব্বত আলী পাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটছে বলে খবর পাই। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি মুহূর্তের মধ্যেই ১১টি বসতঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যদি ফায়ার সার্ভিস সময়মত না আসতো তাহলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটত বলেও জানান তিনি।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, উপজেলার শিলকুপ ইউনিয়নের মোহব্বত আলী পাড়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের খবর পাই। খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমি দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এসময় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।