চবি প্রতিনিধি »
‘বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রচলিত ধারনা হলো এখানে শিক্ষার্থীরা আসবে, ক্লাস হবে, পরীক্ষা হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র ক্লাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। জ্ঞান অর্জনের জন্য যা আয়োজন করা দরকার তা করতে হবে।’
রবিবার (৩০ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মজয়ন্তী ও আন্তর্জাতিক সেমিনারে উদ্বোধকের বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইউজিসি চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব পালনের সুবাদে ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুবার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। ওসব বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিমাণ সেমিনার হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এতটা হয় না। যদিও তিনি এর জন্য ক্যাম্পাস শহর থেকে দূরে হওয়াকে দায়ী করেন। বাংলা বিভাগের আয়োজনে ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সহযোগিতায় সেমিনারটি আয়োজিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতায় তারুণ্যের জয়গান গেয়েছেন। তিনি তরুণদের মাঝে স্বপ্ন দেখেন পুরাতনকে ঝেড়ে ফেলে নতুনত্বকে আবিষ্কার করতে। নজরুল ‘বল বীর’ বলে যাদের সম্বোধন করেছেন তারা অসাধারণ শক্তিময় তারুণ্য। নজরুল সৃষ্ট সাহিত্যকর্ম আমাদের চিরকাল অনুপ্রাণিত করবে। তিনি বলেন, নজরুলের রচনায় সাম্যবাদের দৃষ্টিতে সমাজগঠনের আকাঙ্ক্ষা আছে।
আজকের যুগের তারুণ্যের কাছে তিনি প্রত্যয়দীপ্ত সংগ্রামের নাম। তিনি আরও বলেন, কবি নজরুল ছিলেন গণজাগরণ, সাম্য, দ্রোহ ও প্রেমের কবি। নজরুল মনে করতেন তরুণরা জাগলে দেশ ও জাতি অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছাতে পারবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা যারা বাঙ্গালী, বাংলা ভাষায় কথা বলি, আমাদের যখন সাহস ও শক্তির প্রয়োজন হয় তখন আমাদের সামনে আসে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। নজরুলের কবিতা পাঠই একজন তরুণকে প্রতিবাদী মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে এবং তরুণরাই নজরুলকে পৌঁছে দিতে পারে।
বাংলা বিভাগের সভাপতি এবং আন্তর্জাতিক সেমিনারের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজের সভাপতিত্বে সেমিনারর স্বাগত বক্তব্য দেন বিভাগের শিক্ষক এবং সেমিনারের সদস্য সচিব প্রফেসর ড. আনোয়ার সাইদ। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. মোনালিসা দাস, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল সেন্টারের সোশ্যাল এন্ড কালচারাল স্টাডিজের ডিরেক্টর ড. স্বাতী গুহ এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. মানবেন্দ্রনাথ সাহা।
এছাড়াও আলোচক হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. নুরুল আমিন, প্রফেসর ড. লায়লা জামান, বিশিষ্ট কবি ও কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত গবেষক ও বাংলা বিভাগের প্রাক্তন প্রফেসর ড. মাহবুবুল হক। অনুষ্ঠানে নজরুল সঙ্গীত পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম নজরুল একাডেমীর প্রশিক্ষক ও সাধারণ সম্পাদক ফাহমিদা রহমান।