ksrm-ads

১ মে ২০২৫

ksrm-ads

বোয়ালখালীতে হাটে উঠার অপেক্ষায় ৪৮ হাজার কোরবানির পশু

আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে প্রায় ৪৮ হাজার পশু প্রস্তুত করেছেন এখানকার খামারিরা। এসব পশু হাটে তোলার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় কোরবানির পশুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩৯ হাজার। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১ হাজার ৭৫৭ টি ছোট-বড় খামারে এসব পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ২ হাজার পশু বেশি রয়েছে। এদিকে গো-খাদ্যের চড়া দাম আর বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে গড়া খামার মালিকরা বলছেন, উপযুক্ত দাম না পেলে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে তাদের।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সেতু ভূষণ দাশ বলেন, খামারি ও প্রান্তিক কৃষক মিলে এবার ৩৮ হাজার ৮১৫ টি পশু প্রস্তুত করেছে। এর মধ্যে ২৭ হাজার ৭৪৪টি গরু , ৬ হাজার ১১০টি মহিষ, ১১ হাজার ৬৪০ টি ছাগল ও ২ হাজার ৪৮৫ টি ভেড়া রয়েছে।

উপজেলার ১৪ টি স্থায়ী-অস্থায়ী হাটে গবাদিপশু বেচাকেনা হয়। তবে এসব হাট এখনো জমে উঠেনি। আগামী সপ্তাহ থেকে এসব হাট ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে সরব হয়ে উঠবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, উপজেলার খামারগুলোতে কোরবানির জন্য বেশি পশু লালন-পালন করায় কোরবানিতে বিদেশি পশুর প্রতি নির্ভরশীলতা কমেছে। এছাড়া নিজেদের উৎপাদিত পশু দিয়েই কোরবানির চাহিদা পূরণ করে বাইরে বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান এ কর্মকর্তা।

রবিবার (০২ জুন) বিকেলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার প্রান্তিক খামারি ও কৃষকরা গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত থাকেন। দেশে গত কয়েক বছর ভারত থেকে পশু কম আমদানি করায় দেশি গরুর চাহিদা বেড়েছে।

শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের মেসার্স বার আউলিয়া এ্যাগ্রো ট্রেডার্স এর স্বত্ত্বাধিকারী মো. ইউছুপ বলেন, ২ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা মূল্যের ৫০টি বড় গরু বিক্রয়ের জন্য মোটাতাজা করেছেন। গতবারের তুলনায় এবার গরুর মূল্য ২০ থেকে ২৫ শতাংশ দাম বাড়তি রয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গতবার গরু মোটাতাজা করে কাঙ্খিত মূল্য পাওয়া যায়নি। এইবারও কয়েক দফায় গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উপযুক্ত দাম নিয়ে শংকায় রয়েছি।

খামারে এবার দুইশত গরু মোটাতাজা করেছেন উপজেলার শাকপুরা এলাকার তাজোয়ার ক্যাটেল রাঞ্চের পরিচালক মো সুমন। এর মধ্যে ৩০-৪০টি বড় গরু। বাকীগুলো মাঝারি ও ছোট। বড় গরুর বাজার মূল্য ৩ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা এবং মাঝারী ও ছোট সাইজের গরুর দাম হাঁকছেন এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা। তিনি বলেন, বোয়ালখালীতে ছোট ও মাঝারী গরুর চাহিদা বেশি। অনেকেই ইতিমধ্যে খামার থেকে গরু কোরবানির জন্য পছন্দ করেছেন। গো-খাদ্য ও শ্রমিকের মজুরি বাড়তি হওয়ায় গরুর উপযুক্ত দাম না পেলে লোকসান হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে জানান তিনি।

সারোয়াতলীর পূর্ব খিতাপচর গ্রামের খামারি হক এগ্রোর স্বত্ত্বাধিকারী মো. তানভীরুল হক ইমন বলেন, খামারে ৪০টি মাঝারী ও ছোট সাইজের গরু রয়েছে। এসব গরু ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে। এছাড়া ৩০টি ছাগল বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করেছেন। ছাগলের দাম ১০ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা। তবে পশুর মূল্য গতবারের তুলনায় এবার কিছুটা চড়া বলেন জানান এ খামারি। ইমনের দাবি, গো-খাদ্যের মূল্য বাড়তি থাকায় দামে ছাড় দিতে পারছেন না। ফলে উচিত মূল্য না পেলে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।

খামারিরা গরুর দাম বেশি হাঁকছেন জানিয়ে উপজেলা সদরের আবুল মনছুর বলেন, প্রতিবারই খামারিরা গরুর দাম বিভিন্ন অজুহাতে বেশি চেয়ে থাকে। অথচ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এর চেয়ে অনেক কম দামে গরু বিক্রয় করে।

মো. মোজাম্মেল হক জানান, এখনো অনেক সময় আছে। ঈদের দুই-তিনদিন আগে হাট থেকে কোরবানির পশু কিনবেন তিনি। এমনিতেই সবকিছুর দাম এখন চড়া। আয়ের সাথে ব্যয়ের সঙ্গতি করা যাচ্ছে না। ফলে আগেভাগে নয়, হাট ঘুরেই পছন্দের গরু কিনবেন তিনি।

ছেলে মেয়েদের পছন্দ অনুযায়ী গতবার লাল রঙের গরু কিনেছিলেন মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার নিচে এখন গরুই মিলছে না।

আরও পড়ুন