ksrm-ads

২০ এপ্রিল ২০২৫

ksrm-ads

ব্যাংকিং লেনদেনে জালিয়াতচক্র

বিশেষ প্রতিবেদক  »

ব্যাংকিং অর্থ লেনদেনে করোনাকালীন সময়ে জালিয়াতি এড়াতে সতর্ক থাকতে হবে। অন্যথায় জালিয়াত চক্র হাতিয়ে নিতে পারে আপনার কষ্টার্জিত অর্থ। আপনি যদি অটোমেটিক ট্রেইলর মেশিন (এটিএম) ও পয়েন্ট অব সেলস মেশিনে (পিওএস) পিনকোড ব্যবহারে অসতর্ক হোন তাহলে প্রতারক চক্রের জালিয়াতির খপ্পরে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় সাবসিডিয়ারি ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের মোবাইলে সতর্কতামূলক ম্যাসেজ পাঠানো শুরু করেছে।

অভিযোগ রয়েছে, যেসব গ্রাহক ক্রেডিট কার্ড ও ডেভিড কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন শপিং মল কিংবা নামিদামি দোকান থেকে কেনাকাটা করেন সেক্ষেত্রেও পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) এ পিন কোড এন্ট্রিতে সতর্ক থাকেন না। আবার একজন ক্রেতার পাশাপাশি সেখানে আরেকজন ক্রেতা দাঁড়িয়ে থাকেন এবং কৌতুহলবশত উঁকি মেরে তাকিয়ে থাকাটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। পরক্ষণে পিনকোড হ্যাক করে জালিয়াত চক্র অর্থ হাতিয়ে নেয়ার মত ঘটনা ঘটছে।

এ ব্যাপারে জেসন ইশতিয়াক নামের এক গ্রাহক বাংলাধারাকে জানান, করোনাকালীন সময়ে এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ ধরনের ম্যাসেজ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রতারণা প্রতিরোধে ওই ম্যাসেজে করোনাকালীন সময়ে বেশকিছু করণীয় এর কথা বলা হয়েছে। বেশকিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকেও গ্রাহকের উদ্দেশ্যে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং লেনদেনে সতর্কতা অবলম্বনে গ্রাহককে নিজের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে হবে। পাসওয়ার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে কঠিন পাসওয়ার্ড এবং কঠিন পিন নাম্বার ব্যবহার করে হিসাব সুরক্ষিত রাখতে হবে। কোন গ্রাহক পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করলে তা সংরক্ষণ করতে হবে এমনকি এমনভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যাতে অন্য কেউ বুঝতে বা ব্যবহার করতে না পারে। গ্রাহকের অনুমোদিত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কারও সঙ্গে ব্যাংকিং ডকুমেন্ট এবং গোপনীয় কোন তথ্য ছবি তুলে বা অন্য কোন মাধ্যমে পরিচিতজনদের মধ্যে শেয়ার করা যাবে না । এ ধরনের তথ্য শেয়ার করলে নিজেই বিপদে পড়ার সম্ভাবনা অত্যধিক। এমনকি বিদেশ থেকে ফেরত আসার পর এবং বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেনে অবশ্যই গ্রাহক নিজেকে সতর্ক অবস্থানে রাখতে হবে। অন্যথায় গ্রাহকের চুরি হওয়া পিন নম্বর দিয়ে প্রতারক চক্র অর্থ উত্তোলন করে গ্রাহককে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

অভিযোগ উঠেছে, কোভিড নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে নানাভাবে ঘর থেকে বের না হতে বলা হচ্ছে। যেখানে ব্যাংক খোলা রয়েছে সেখানে গ্রাহক ছাড়া ব্যাংক অচল থাকবে। তবে অনেক গ্রাহকের একাউন্ট প্রতারকরা অনলাইনের মাধ্যমে জালিয়াতি করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে গ্রাহক সচেতন না হওয়া এবং গ্রাহকের এটিএম কার্ডের যাবতীয় তথ্য গোপন রাখতে না পারলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। এক্ষেত্রে শুধু গ্রাহকই নয়, ব্যাংক কর্তৃপক্ষও গ্রাহকের নানা প্রশ্নের শিকার হতে পারে। গ্রাহক সচেতন না হলে এটিএম বুথে গিয়ে যদি প্রকাশ্যে পিন কোড চেপে অর্থ উত্তোলন করেন তাতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের দায় নেবে না। কারণ, এটিএম কার্ড ইস্যুর সময় যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে তন্মধ্যে অন্যতম শর্ত হচ্ছে পিনকোড গোপন রাখা।

এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক এ ম্যাসেজে উল্লেখ করা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর এ সময়ে জালিয়াত চক্র প্রতারণার চেষ্টা চালাচ্ছে। গ্রাহককে সচেতন হয়ে নিজের কার্ডের পিন নাম্বার গোপন রাখার পাশাপাশি অনলাইন ব্যাংকিংয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কার্ড ব্যবহারকারি নিজে অনলাইনে লেনদেন করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য ওয়েব সাইটটি ব্যবহার করতে হবে। বর্তমান সময়ে ওয়েবসাইট ও ই-মেইল হচ্ছে জালিয়াতির অন্যতম সহজ মাধ্যম। ফলে ওয়েবসাইট ও ই-মেইল ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে। যদি কোন ই-মেলের মাধ্যমে কোন ওয়েবসাইটে লেনদেনকারীর কার্ডের তথ্য ও গোপন নম্বর পরিবর্তনের অনুরোধ করা হয় সেক্ষেত্রে ওই ওয়েবসাইটটি এড়িয়ে চলতে হবে এবং দ্রুত এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। উল্লেখ্য, কোন গ্রাহক এক্ষেত্রে নিজস্ব তথ্য প্রকাশ করলে তাকে অবশ্যই বোকামির দন্ড দিতে হবে। অর্থাৎ একাউন্ট থেকে হ্যাক করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, অটোমেটিক ট্রেইলর মেশিন (এটিএম) এবং পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। পিওএসে কেনাকাটার সময় কার্ড সব সময় নিজের নজরে রাখতে হবে এবং দ্রুত লেনদেন সম্পন্ন করতে হবে। পিওএস মেশিনে পিন নাম্বার দ্রুততার সাথে চাপতে হবে, যাতে অন্য কেউ তা মুখস্ত করতে না পারে। এক্ষেত্রে গ্রাহক প্রয়োজনে তা আড়াল করে পিন কোড প্রবেশ করতে হবে।

এছাড়াও পিন নম্বর প্রবেশকালে পারিপার্শ্বিক পরিবেশের বিষয়টিও মাথায় রেখে সতর্ক থাকতে হবে গ্রাহককে। পিওএস মেশিনের পিন প্যাড হাত দিয়ে আড়াল করে পিন নাম্বার চাপলে নিজের একাউন্টটি নিরাপদ থাকবে। এতে পিনকোড বা নাম্বার চুরি করার সুযোগ থাকবে না। পিন ব্যবহারের সময় মাথার উপরে অস্বাভাবিকভাবে কোন ডিভাইস বা পিনহোল ক্যামেরা আছে কিনা সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন