ksrm-ads

২১ এপ্রিল ২০২৫

ksrm-ads

ভাতিজাকে নেতা না করায় ছাত্রলীগের সভাপতিকে আ’লীগ নেতার মারধর

জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার »

ভাতিজাকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতৃত্বে না আনায় কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিকে হামলা করে রক্তাক্ত করেছেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য বদিউল আলম আমীর। এসময় উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতির সাথে থাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা লোটাসকেও মারধর করা হয়েছে।

রবিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে কক্সবাজার জেলা পরিষদ কার্যালয় চত্বরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আহত কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি কাজী তামজিদ পাশা ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা লোটাস কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

সূত্র জানায়, কক্সবাজার সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি নেই বেশ কিছুদিন। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাবেক সাংসদ মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী ও সদর আসনের সংরক্ষিত নারী সাংসদ ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কানিজ ফাতেমা আহমেদের বাড়ি চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের খামারপাড়ায়। এ কারণে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠনকালে নেতৃবৃন্দ মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী ও তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা আহমেদের পরামর্শ নেন।

তাদের সাথে পরামর্শ করে শূন্য থাকা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি হাবিব উল্লাহর ছেলে ওমর হাবিবকে সভাপতি ও ছাত্রলীগ কর্মী নাবিল রেজাকে সম্পাদক করে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছিল। এটি জানতে পেরে একই ইউনিয়নের বাসিন্দা সদর আওয়ামী লীগ নেতা বদিউল আলম আমীর তার ভাতিজা শাকিল আমীরকে সভাপতি বা সম্পাদক করার তদবির করেন।

সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী তামজিদ পাশা নারী সাংসদ বা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিয়ে ফোন করাতে বলেন। আমীর ফোন না করিয়ে রবিবার কমিটি চূড়ান্ত হচ্ছে জেনে জেলা পরিষদ এলাকায় এসে ভাতিজা, বউসহ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পাশাকে আক্রমণে রক্তাক্ত করে। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তানজিদ ওয়াহিদ লোটাসকে বেদম প্রহার করা হয়। হামলার পর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার নিয়ে গালিগালাজ করায় চেয়ারম্যানের স্বজনরা এসে বদিউল আলম আমীর ও তার ভাতিজাদের পেটান বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। এখানে আহত হলে, সে দায় আহত ছাত্রলীগ নেতাদের উপর তুলে দিতে প্রচেষ্টা চালান আমীর ও তার স্বজনরা।

এদিকে হামলার ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখ করে রোববার রাতে সদর মডেল থানায় এজাহার দিয়েছেন কাজী তামজীদ পাশা।

অভিযুক্তরা হলেন, বদিউল আলম আমির (৪৮) ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, তার ভাতিজা শাকিল আমির (২৪), রাকিব আমির (২০)। এতে অজ্ঞাতনামা রয়েছে আরও ৫/৬ জন রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

আহত উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সদরের খুরুশকুল ১ নম্বর ওয়ার্ডের তেতৈয়া সওদাগর পাড়ার বাসিন্দা শফিউল হকের ছেলে কাজী তামজীদ পাশা বলেন, বদিউল আলম আমির কলাতলীর আমীর ড্রিম নামে একটি কটেজ মালিক। তার বিরুদ্ধে অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার নানা অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ক একটি সালিসে তার অপকর্মের প্রতিবাদ করায় ক্ষুব্ধ হন তিনি। এর মাঝে তার ভাতিজাকে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতা বানানোর তদবির আমরা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদক গ্রহণ করিনি। আগের বিষয় এবং তার আবদার না রাখা সব মিলিয়ে পরিকল্পিত হামলার ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।

তার দাবি, বেপরোয়া হামলায় গুরুতর আহত হলে তার পকেট থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা, ব্যবহারের মোটরসাইকেল ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। অভিযুক্তরা হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখেছে। তাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান আহত ছাত্রলীগ নেতা কাজী তামজীদ পাশা।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত বদিউল আলম আমীর বলেন, আমার ভাতিজাকে নেতা বানাতে পাশাকে ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়। যার প্রমাণ হিসেবে সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। তবে সে ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিকদের দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানকে দিয়েছেন বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, ভিডিও ফুটেজ তো দূরের কথা, টাকা নেওয়ার বিষয়ে মৌখিক কোন অভিযোগও আমার কাছে কেউ করেনি।

মারুফ আদনানের স্বীকারোক্তির বিষয়টি উল্লেখ করে জানতে চাইলে বদিউল আলম আমীর তখন আরেক ধরনের মন্তব্য করে বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

তার কটেজে অনৈতিক ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের জন্য অসংখ্য বার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক অভিযানের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, অবৈধ কর্মকাণ্ডের বেশি অভিযোগ উঠায় গত কয়েক মাস আগে কটেজটি আমি বিক্রি করে দিয়েছি।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম উদ্দিন বলেন, ছাত্রলীগ নেতা পাশার ওপর হামলার ঘটনায় একটি এজাহার দেয়া হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন