ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। এর বদলে একটি স্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হবে। বুধবার (২১ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জানা গেছে, ব্যাংকটির বেশিরভাগ শেয়ার এস আলমের হাতে থাকায় আপাতত ব্যাংকটিতে সব স্বতন্ত্র পরিচালক দেওয়া হবে। পরে আগের পরিচালকরা ২ শতাংশ করে শেয়ার কিনে আসার পর তাদের পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে।
ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থ্যানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ব্যাংক খাতে পালাবদলের মধ্যে সবার আগে ইসলামী ব্যাংককে এস আলমের ‘দখলমুক্ত’ করতে আন্দোলন শুরু হয়। সরকার পতনের পরপরই ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিক্ষোভের মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গত ১১ আগস্ট একপক্ষ গুলি ছুড়লে ছয়জন আহত হয়।
গত রোববার ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির বর্তমান বোর্ড অব ডিরেক্টরস ভেঙে নতুন বোর্ড গঠনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর দুটি লিখিত আবেদন করা হয়েছেল। ইসলামী ব্যাংকের প্রাথমিক (IPO) শেয়ার হোল্ডারদের পক্ষে আবেদন করেন ড. এম কামাল উদ্দীন জসীম। ব্যাংকের সর্বস্তরের গ্রাহকদের পক্ষে অপর আবেদনটি করেন সৈয়দ মেজবাহ উদ্দীন মাহীন।
লিখিত আবেদনে বলা হয়, আমরা বিশ্বাস করি, আপনি ইতোমধ্যে বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে দেশের সর্ববৃহৎ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। ব্যাংকটির বোর্ড অব ডিরেক্টরস ও কতিপয় অসৎ কর্মকর্তার সহায়তায় ব্যাংকের বিপুল অর্থ পাচার ও লোপাটের ভয়ংকর চিত্র বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আমরা মনে করি, বাস্তব অবস্থা এর চেয়েও জঘন্য। দীর্ঘদিন এই অনিয়ম ও লুটপাটের ধারা অব্যাহত থাকায় ব্যাংকটির প্রতি আমানতকারীদের/গণমানুষের এবং শেয়ার হোল্ডাদেরও আস্থায় ফাটল ধরেছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, ইতোপূর্বে এ ব্যাংক বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক The Strongest Bank in Bangladesh হিসেবে স্বীকৃত ছিল। প্রতি বছর প্রায় ডজন খানেক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হতো এ ব্যাংক। তাছাড়া বাংলাদেশের এক মাত্র ব্যাংক, যা একাধারে বিগত ১২ বছর ধরে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্ববিখ্যাত ম্যাগাজিন ‘দি ব্যাংকার’ কর্তৃক বিশ্বসেরা ১০০০ ব্যাংকের তালিকায় স্থান লাভ করে আসছিল।
এর আগে গতকাল সোমবার (১৯ আগস্ট) এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন ছয় ব্যাংকের ঋণ বিতরণ ও এলসি খোলা স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বেনামি ঋণ ও অর্থপাচার ঠেকাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ব্যাংক ছয়টি হলো- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।