ksrm-ads

১৯ এপ্রিল ২০২৫

ksrm-ads

ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর—স্ক্রিনে আঙ্গুল রাখলেই ভেসে উঠবে বঙ্গবন্ধুর জীবনী

মামুনুর রশিদ অভি»

রেলের কোচের দুইপাশে রয়েছে কয়েকটি এলইডি স্ক্রিন। সেই স্ক্রিনে আঙ্গুল স্পর্শ করতেই ভেসে আসবে বঙ্গবন্ধুর ছবি, ভাষণ ও তার জীবনের নানা দিক নির্দেশনা। জানা যাবে তার ছাত্রজীবন, বেড়ে ওঠা, মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মাধ্যমে গণমানুষের প্রাণের নেতা হয়ে ওঠার গল্প। এছাড়াও পরিচিত হওয়া যাবে তার শৈশবের দিনগুলোর সঙ্গে। এসব কিছু দেখা যাবে সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা ভ্রাম্যমাণ রেলওয়ে জাদুঘরে।

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের উদ্যোগে প্রান্তিক মানুষের কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন ও স্বাধীনতা যুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে দেশে প্রথমবারের মত তৈরি করা হয়েছে এ ভ্রাম্যমাণ রেলওয়ে জাদুঘর। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের জন্য তৈরি করা এই মিটারগেজ কোচটিতে রয়েছে সর্বোচ্চ প্রযুক্তির ব্যবহার।

জানা যায়, প্রতিটি ভিডিও নির্মাণ করা হয়েছে স্থিরচিত্রের সমন্বয়ে। কোচের এক প্রান্তে একটি বড় এলইডিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ভাষণসমূহ এবং থিম সংসহ জাতির জনকের উপর রচিত অন্যান্য গান প্রচার করা হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত জাদুঘরটিতে রয়েছে ‘জয় বাংলা’ লেখার আদলে তৈরা করা একটি বুক সেলফ। এছাড়া জাদুঘরটিতে ১২টি টেবিলে স্থাপন করা হয়েছে জাতির পিতার পৈতৃক নিবাসের প্রতিরুপ, তার ব্যবহৃত চশমা, মুজিব কোট, টুঙ্গিপাড়ার সমাধিস্থল ও ১৩টি ঐতিহাসিক অনুকৃতি।

YouTube player

ভ্রাম্যমাণ রেলওয়ে জাদুঘর দেখতে ছুটে এসেছিলেন সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে রনি নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ত্যাগ কখনই ভুলবার নয়। তার ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছুই দেখা যাচ্ছে কোচে থকা স্ক্রিনে। বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই ভাল লেগেছে। আমরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারছি।’

জাদুঘরটিতে ১৯২০-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধ, সংগ্রামী ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে। প্রায় দেড় বছর সময় ধরে তৈরী করা ভ্রাম্যমাণ এই জাদুঘরটিতে ব্যয় হয়েছে ৬৫ লাখ টাকা।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে রেলের বগিতে যে জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে এটি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাবে এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে। এই উদ্যোগটি অত্যন্ত চমৎকার।’

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রাম শহরে প্রথমে ৫ দিন দেখাব। এরপর ভাটিয়ারী, সীতাকুণ্ডসহ প্রত্যেকটা স্টেশনে কয়দিন ধরে থাকবে। আমরা সময় নিয়ে সুন্দরভাবে দর্শনার্থীদের দেখাব। প্রথম ধাপে সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এবং তারপর বিরতি দিয়ে বিকেল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা বা ৭টা পর্যন্ত।’

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘এটা রেলমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে হয়েছে যে একটা ব্রডগেজ এবং মিটারগেজ বগিকে আমরা ভ্রাম্যমাণ বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে জাদুঘর হিসেবে রুপান্তর করব। সেই অনুযায়ী রুপান্তরও করা হয়েছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্ম থেকে শুরু করে তার বর্ণাঢ্য জীবনের সবটাই দেখানোর চেষ্টা করেছি।’

ভ্রাম্যমাণ জাদুঘরটি ৫ আগষ্ট পর্যন্ত থাকবে চট্টগ্রাম রেলওয়ের স্টেশনের ৯ নম্বর প্লাটফর্মে। এরপর ভাটিয়ারী স্টেশনে থাকবে ৫ থেকে ৭ আগষ্ট এরপর ধারাবাহিকভাবে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন স্টেশনে থাকবে।

আরও পড়ুন