কক্সবাজার প্রতিনিধি »
কঠোর লকডাউনে আয় রোজগার নাই। পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটছিলো দিনমুজর নুর মোহাম্মদের। কিছু আয়ের আশায় এলাকার অন্যদের সাথে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস, মাছ নিয়ে ফেরার বদলে লাশ হয়ে ঘরে ফিরলেন নুর মোহাম্মদ।
সোমবার (৫ জুলাই) সকালে চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বটতলী ঘাট থেকে ডুবুরিদের সহযোগিতায় হতভাগা নুর মোহাম্মদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে রবিবার দুপুরের দিকে তিনি পানিতে ডুবে নিখোঁজ হন। নিহত নুর মোহাম্মদ (৪৫) কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম ভাদিতলা এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দিনমজুর নুর মোহাম্মদসহ এলাকার ৮-১০ জন মিলে ডুলাহাজরা বটতলী ধোয়ার কুমে বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে যান রবিবার দুপুরে। বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে বসা অবস্থা থেকে হঠাৎ পানিতে ঝাঁপ দেন নুর মোহাম্মদ। নদীর কুমের (গভীর জলে) পানিতে ডুবে যাওয়া থেকে অনেকক্ষণ না উঠায় সঙ্গীরা পানিতে নেমে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসেও বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুজি করে। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত লাশ না মেলায় ফিরে যান সবাই। সঙ্গীরা ফিরে এসে এলাকার মেম্বার জিয়াবুল হককে বিষয়টি জানায়।
ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভাদিতলা এলাকার মেম্বার জিয়াবুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে তার (নুর মোহাম্মদের) স্বজনসহ ডুলাহাজরা যায়। ডুলাহাজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে দীর্ঘক্ষণ প্রচেষ্টার পর সোমবার সকালে লাশটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
চকরিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং ওইদিন আমার কর্মীরা বেশ কিছুক্ষণ খোঁজাখুজিও করেন। পরে চট্টগ্রাম থেকে ডুবুরি দল এনে তাদের মাধ্যমে ডুলাহাজারা বহলতলী ঘাটের পানিতে নিখোঁজ ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করি। পরে স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যানের মাধ্যমে লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
নুর মোহাম্মদের মৃত্যুতে এলাকায় শোক বিরাজ করছে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে পরিবারটি আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। অসহায় পরিবার জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বাংলাধারা/এফএস/এআর