ksrm-ads

১৭ মে ২০২৫

ksrm-ads

মানিকছড়িতে জালিয়াতির মাধ্যমে ওয়ারিশান সনদ ও ভূমি রেজিষ্ট্রেশন, জড়িত ১০ জন

অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা, তথ্য গোপন ও জাল- জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া ওয়ারিশান সনদ সৃজনের মাধ্যমে ৪ একর তৃতীয় শ্রেণির টিলা ভূমি রেজিস্ট্রেশন করার অপরাধে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন ২নং বাটনাতলী ইউনিয়নের সেম্প্রুপাড়া এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষক ফারুক হোসেন নামের এক ভুক্তভোগী। মামলার বাদী ডাইনছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. ছিদ্দিকুর রহমানের সন্তান।

মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন- মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দিন, রোকনুজ্জামান রুদ্র, মো. মুনিরুল ইসলাম, মোসা: লাইলি বেগম, মো. ফারুক হোসেন প্রকাশ ব্যাগ ফারুক, মো. আবদুল হাই, হামিদুল ইসলাম পলাশ, মো. হারুনুর রশিদ, রাইটার মো. ফরিদ মিয়া ও তৎকালীন ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ শাহজাহান সরকার।

মামলার আসামিদের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি, কুমিল্লা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলায়। খাগড়াছড়ি আদালত সূত্রে জানা যায়, জেলার ইতিহাসে এটি একটি ডিজিটাল জালিয়াতির মামলা। সূত্র : সি.আর মামলা নং- ৪৫৫/২০২৩।

বিজ্ঞ আমলী আদালত চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি আমলে নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পুলিশ সুপার, পিবিআই- চট্টগ্রাম জেলাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। ডিজিটাল জালিয়াতির এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো মানিকছড়ি উপজেলায় চলছে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড়। জালিয়াতির ঘটনায় মানিকছড়ি উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ শাহজাহান সরকার সরাসরি জড়িত থাকলেও পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে রহস্যজনক কারণে তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বাংলাধারাকে বলেন, ভূমি জালিয়াতির ঘটনায় জড়িতরা কোনো ভাবেই ছাড় পাবে না। সরকারি কর্মচারী হলেও রক্ষা নাই। বিধি মোতাবেক জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত ওয়ারিশান সনদ ও ভূমির রেজিষ্ট্রেশন দলিল বাতিল করা হবে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মানিকছড়ি উপজেলাধীন ২৩৪ নং সেম্প্রপাড়া মৌজার ৩২ নং হোল্ডিং এর ৪৯৭নং (আংশিক) দাগের রেকর্ডীয় মালিক মো. আবদুল খালেক, পিতা- মৃত: এজার উদ্দিন এর নামে ৫ একর ৩য় শ্রেণির ভূমি বন্দোবস্তী মামলা নং- ১৪২/৮৩-৮৪ মূলে জমাবন্দি ভলিউমে রেকর্ডভূক্ত ছিল। উক্ত ভূমির ১নং চৌহদ্দি : উত্তরে- রাস্তা, দক্ষিণে- নিজ টিলা, পূর্বে- জসিম উদ্দিন, পশ্চিমে- আমিনুল ইসলাম। অত্র বন্দে ০.২৫ (পঁচিশ শতক) একর ৩য় শ্রেণির ভূমি।

২নং চৌহদ্দি : উত্তরে- নিজ বসত টিলা, দক্ষিণে- লোংগা, পূর্বে- জসিম উদ্দিন, পশ্চিমে- আমিনুল ইসলাম। অত্র বন্দে ৪.৭৫ (চার একর পঁচাত্তর শতক) একর ৩য় শ্রেণির ভূমি। বিগত ১১/১০/২০১৭ খ্রি. তারিখে মানিকছড়ি থানাধীন ভূঁইয়া মার্কেটে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার শর্তে ভূমির রেকর্ডীয় মালিক মো. আবদুল খালেকের নিকট থেকে বর্ণিত দুই চৌহদ্দির ৫ একর ৩য় শ্রেণির ভূমি ৪ লক্ষ টাকায় সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে বাদীর পিতা- মো. ছিদ্দিকুর রহমান ক্রয় করেন। ভূমির মূল্য বুঝে পেয়ে বায়না দলিল মূলে রেকর্ডীয় মালিক মো. আবদুল খালেক উক্ত ৫ একর ৩য় শ্রেণির ভূমির দখল ক্রেতা- মো. ছিদ্দিকুর রহমানের নিকট হস্তান্তর করেন। তখন থেকেই ঘর বাড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ বাগান সৃজন করে বাদী ফারুক হোসেন উক্ত ভূমি সর্বজনের জ্ঞাতসারে অদ্যাবধি পর্যন্ত ভোগদখলে বিদ্যমান আছেন।

রেকর্ডীয় মালিক মো. আবদুল খালেকের পুত্র মো. মুনিরুল ইসলাম উক্ত বায়না দলিলের ১নং সাক্ষী হন। বর্তমানে উক্ত বিক্রিত ভূমির মূল্য কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ১নং থেকে ৪নং আসামিগণের কু-দৃষ্টি পড়ে বাদীর ক্রয়সূত্রে মালিকানাধীন বর্ণিত ভূমির উপর।

৩নং ও ৪নং আসামির দেওয়া তথ্যমতে বিগত ১২/১০/২০২১ খ্রি. তারিখে নিজ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার আলিনগর নাদেরাবাদ গ্রামে ভূমির রেকর্ডীয় মালিক মো. আবদুল খালেক বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করলে সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়। যার ফলে বাদী রেকর্ডীয় মালিক মো. আবদুল খালেকের নিকট থেকে ক্রয়কৃত ভূমির রেজিস্ট্রেশন নিতে ব্যর্থ হন।

আসামিগণ পরস্পর যোগসাজসে প্রকৃত তথ্য গোপন করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলাধীন ২নং বাটনাতলী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা সাব্যস্ত করে, মৃত্যুস্থান বাড়ির হোল্ডিং নম্বর- ২৭১, গ্রাম- ঢাকাইয়া শিবির, উপজেলা- মানিকছড়ি, জেলা- খাগড়াছড়ির ঠিকানা দেখিয়ে রেকর্ডীয় মালিক মো. আবদুল খালেকের মিথ্যা তথ্য সম্বলিত মৃত্যু নিবন্ধন ইউপি, রেজিস্টারভুক্ত করেন। মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর পূর্বের স্থায়ী ঠিকানা ও মৃত্যুর সময় বর্তমান ঠিকানা- ২৭১, ঢাকাইয়া শিবির- ৪৪৬০, বাটনাতলী, মানিকছড়ি, খাগড়াছড়ি উল্লেখ করলেও বাস্তবে উক্ত ঠিকানায় মো. আবদুল খালেক কিংবা তার পরিবারের কোনো সদস্যের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। যা সম্পূর্ণরূপে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতি।
সূত্র: ২নং বাটনাতলী ইউনিয়ন পরিষদের মৃত্যু নিবন্ধন সনদ নম্বর: ১৯৬২৪৬১৬৭১৯১০৫৬৬২, নিবন্ধন বহি নম্বর: ১, সনদ প্রদানের তারিখ: ২৪/০২/২০২২ খ্রি.।

জানা যায়, ৩নং আসামি মো. মুনিরুল ইসলাম ১নং, ২নং, ৪নং, ৫নং, ৬নং, ৭নং, ৮নং আসামিগণের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় ২নং বাটনাতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহিম, ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মহররম আলী ও ২৩০নং বাটনাতলী মৌজা প্রধান গংব্রা চৌধুরীর নিকট প্রকৃত তথ্য গোপন ও জালিয়াতির মাধ্যমে ২ জন ওয়ারিশকে বঞ্চিত করে তার পিতা- মো. আব্দুল খালেকের নামীয় ওয়ারিশান সনদ সংক্রান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন। সূত্রঃ ২নং বাটনাতলী ইউনিয়ন পরিষদের উত্তরাধিকার সনদ সংক্রান্ত বিবিধ মামলা নং- ৩১৭/২০২২ (মানিকছড়ি), স্মারক নম্বর- ৩১৭, তারিখ- ২৫/০৭/২০২২ খ্রি.। বিক্রয় দলিল মূলে পূর্ব থেকেই বাদীর দখলে উক্ত ৫.০০ (পাঁচ) একর ৩য় শ্রেণির ভূমি থাকলেও রেকর্ডীয় মালিক মো. আবদুল খালেকের মৃত্যুর পর তার দুই কন্যা- রোকসানা বেগম ও শিউলী বেগমের নাম পরিচয় গোপন রেখে স্ত্রী মোসা: লাইলি বেগম ও পুত্র মো. মুনিরুল ইসলাম তাদের দুইজনের নামে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের নিকট তথ্য গোপন করে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ওয়ারিশান সনদ সৃজন করেন। সূত্র: খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের উত্তরাধিকারী সনদ স্মারক নম্বর: ৩১৭/২০২২-২৭৮, তারিখ: ০৪/০৯/২০২২ খ্রি.।

৩নং আসামি মো. মুনিরুল ইসলাম ও ৪নং আসামি লাইলি বেগম প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিগত ০১/০৮/২০২২ খ্রি. তারিখে অতি গোপনে বাদীর পিতার নিকট বায়না দলিলমূলে বিক্রিত উক্ত সম্পত্তির ৪.০০ (চার) একর ৩য় শ্রেণির ভূমি ৪ লক্ষ টাকায় ১নং আসামি ফোরকান উদ্দিনের নিকট বিক্রয় করে সাফ বিক্রয় দলিল সম্পাদন করেন এবং অবশিষ্ট ১.০০ (এক) একর ৩য় শ্রেণির ভূমি ১ লক্ষ টাকায় বিক্রয় করে ২১/০৮/২০২২ খ্রি. তারিখে মিথ্যা তথ্য সম্বলিত হলফনামা সম্পাদন করেন। সাফ বিক্রয় দলিলমূলে ২নং থেকে ৯নং আসামিগণ প্রতারণ্য ও জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়া ১নং আসামির নামে ৪.০০ (চার) একর ৩য় শ্রেণির ভূমি মানিকছড়ি ভূমি অফিসে নামজারী মামলা রুজুর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু করলে, বিগত ২২/০১/২০২৩ খ্রি. তারিখে উক্ত ভূমির রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। সূত্র: নামজারী মামলা নং- ১৮৩ (মানিক) ২০২২, রেজিস্ট্রেশন দলিল নম্বর- ০৬/২০২৩ (মানিকছড়ি), তারিখ: ২২/০১/২০২৩ খ্রি.।

রেজিস্ট্রেশন দলিলমূলে ভূমির ক্রেতা ১নং আসামির নামে রেকর্ড সংশোধন পূর্বক ২৩৪ নং সেম্প্রপাড়া মৌজার ৮৬ নং নতুন খতিয়ান সৃজন করা হয়। সূত্রোক্ত নামজারী মামলার বিক্রয় প্রস্তাবিত ভূমি পূর্ব থেকেই ক্রেতা ও বিক্রেতার দখলে না থাকলেও ১০নং আসামি ভূমি অফিসের তৎকালীন সার্ভেয়ার মো. শাহজাহান সরকার সরেজমিনে তদন্ত না করে বিক্রয় প্রস্তাবিত ভূমি ১নং আসামি ফোরকান উদ্দিনের দখলে পাওয়া যায় মর্মে সম্পূর্ণ মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন সহকারী কমিশনার (ভূমি), মানিকছড়ির নিকট দাখিল করে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে উক্ত নামজারী মামলাটি দ্রুত গতিতে রেজিস্ট্রেশন কার্যে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন মর্মে অনুসন্ধানে জানা যায়।

এছাড়া সুত্রোক্ত মামলার ৪নং আসামি লাইলি বেগম বিগত ২২/০১/২০২৩ খ্রি. তারিখে ১নং ও ২নং আসামির প্ররোচনায় প্রকৃত তথ্য গোপন করে সম্পূর্ণ মিথ্যা হলফনামা সম্পাদন করেছেন বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী। নামজারী মামলা নং- ১৮৩ (মানিক) ২০২২ এর মূল নথিতে যে কবুলিয়তের ফটোকপি সংযুক্ত করা হয়েছে, তা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্টি বলে অনুসন্ধানে জানা যায়।

মামলার ১নং, ২নং, ৩নং, ৫নং আসামিগণ ভূমির রেকর্ডীয় মালিক মো. আবদুল খালেকের নামীয় কবুলিয়ত ফরম জাল জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজন করেছেন মর্মে সরেজমিনে অনুসন্ধানে স্পষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। মূল কবুলিয়ত ফরম পূর্ব থেকেই বাদীর হেফাজতে ছিল, এখনো বাদীর নিকট রয়েছে। ১০নং আসামি ১নং থেকে ৯নং আসামিগণের সমস্ত প্রতারণা ও জাল জালিয়াতি জেনেও সূত্রোক্ত নামজারী মামলার প্রস্তাবিত ভূমির দখল বিষয়ে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে সহকারী কমিশনার (ভূমি)- মানিকছড়ি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও জেলা প্রশাসক, খাগড়াছড়ির নিকট প্রকৃত তথ্য গোপন করে শাস্তিযোগ্য ফৌজদারী অপরাধ করেছেন বলে জানান মামলার বাদী ফারুক হোসেনের আইনজীবী মোঃ শাহিন হোসেন।

সম্প্রতি বাদী ফারুক হোসেন ২৩৪ নং সেম্প্রুপাড়া মৌজা প্রধানের কার্যালয়ে ক্রয়সূত্রে মালিকানাধীন উক্ত ভূমির সরকারি খাজনা পরিশোধের জন্য গেলে, ১নং থেকে ১০নং আসামিগণ কর্তৃক জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অতি গোপনে উক্ত ভূমি রেজিস্ট্রেশন করার ঘটনা অবগত হন। জেলার চাঞ্চল্যকর এ জালিয়াতি মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সরেজমিনে অনুসন্ধানে গেলে বাংলাধারার এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয়- স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবু তাহের, মো. নিজাম উদ্দিন, মো. মনির হোসেন, মো. নুরুল ইসলাম, তোফাজ্জল হোসেন তফজল, কাজী আবুল কাশেম, শফিকুর রহমান, মেম্বার আদৌ মারমা, হেডম্যান থোয়াইচিং চৌধুরী, মো. আরব আলী চেয়ারম্যান, আবদুর রাজ্জাক, মো. ছগির মিয়া, আমিন মিয়া মেম্বার, শহিদুল ইসলাম মোহন চেয়ারম্যান, আবদুল করিম ও আতিউর রহমানের সাথে।

তারা জানান, মামলার এজাহারনামীয় ১নং থেকে ১০নং আসামিগণ বর্ণিত জালিয়াতির ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত। তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই, তারা ভূমিদস্যু এলাকার শত্রু। আসামিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় আরও অনেক অপকর্মের তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়।

এ সময় মামলার বাদী ফারুক হোসেন বাংলাধারার প্রতিবেদককে বলেন, ইতিপূর্বে ওই আসামিগণ হাতে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়া আমার বসত বাড়িতে বে-আইনী জনতাবদ্ধে একত্রিত হয়ে অপরাধজনক অনধিকার প্রবেশ করত: এই মর্মে হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করেছে যে, আমার বসত বাড়িতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে চাইলে আসামিগণকে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে, ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা না দিলে আমার সৃজিত ফলজ বাগান তারা কর্তন করিবে। সকল আসামিগণ মিলে আমার ঘর-বাড়ি রাতের আঁধারে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিবে এবং স্বপরিবারে খুন করবে বলেও তারা হুমকি প্রদর্শন করেছে।
তাদের ভয়ে আমি স্ব-পরিবারে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ বিষয়ে মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তাহমিনা আফরোজ ভুইয়া বলেন, ভুক্তভোগী ফারুক হোসেন জালিয়াতি সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট একখানা অভিযোগ দাখিল করেছেন। আসামিরা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত ওয়ারিশান সনদ দ্বারা ৪ একর তৃতীয় শ্রেণির ভূমি রেজিষ্ট্রেশন করেছে, এটা সত্য। জালিয়াতির সাথে স্থানীয় আরও অনেকে জড়িত রয়েছে। তদন্তে মামলার আসামিরা অপরাধী প্রমাণিত হয়েছে। আবদুল খালেকের নামীয় ওয়ারিশান সনদটি বাতিলের জন্য সুপারিশ করে জেলায় নথি পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক মহোদয় পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

মানিকছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বাংলাধারার এ প্রতিবেদককে জানান, ভূমি জালিয়াত চক্রের মূলহোতা ফারুক হোসেন প্রকাশ ব্যাগ ফারুক, ফোরকান উদ্দিন ও রোকনুজ্জামান রুদ্র। তাদের সাথে স্থানীয় আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে। তারা বিভিন্ন জাল কাগজ তৈরির মাস্টার। ওই এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ আছে।

ভূমির ক্রেতা ফোরকান উদ্দিন ওই জালিয়াতচক্রের পরিকল্পিত পাতানো ফাঁদে পড়েছে। ভুক্তভোগী ফারুক হোসেন এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদে আমার নিকট বিচার প্রার্থী হয়েছেন। উপজেলা পরিষদের বিচারে মামলার আসামি ফোরকান উদ্দিন গংদের ৩০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। পরে জানতে পারি উভয় পক্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। তবে ভুক্তভোগী ফারুক হোসেন সঠিক আছেন, ওই নালিশী ভূমিও তার ভোগ-দখল রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী ভুক্তভোগী ফারুক হোসেনের পক্ষে।

আরও পড়ুন