বাংলাধারা ডেস্ক »
ঢাকার উপকণ্ঠ আশুলিয়ায় মা-খালার পর কিশোরী মেয়েকে অসংখ্যবার ধর্ষণের অভিযোগে এক ভণ্ড পীরকে গ্রেপ্তার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
রোববার ( ৫ মে ) দিনগত রাতে আশুলিয়ার কুরগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ভণ্ড পীরকে তার নিজ বাড়ির পঞ্চম তলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার পীর ওই এলাকার সার্জেন্ট (অব.) আ. রহিমের ছেলে মনির হোসেন (৪০)। সোমবার পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে গ্রেপ্তারকৃতকে আদালতে প্রেরণ করেছে। তার সহযোগী মকবুল ও হাসনাত পলাতক রয়েছে; তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ রিজাউল হক দিপু জানান, দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের বড় বোনকে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে নানা কৌশলে ভণ্ড পীর মুরিদ করে ধর্ষণ করে আসছিলো। পরে তার ছোট বোন ও কিশোরী মেয়েকে একই কৌশলে ধর্ষণ করে। ভুক্তভোগী নারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছোট বোন বাদি হয়ে ভণ্ড পীর ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহারে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে ভণ্ডপীর মনির তার প্রতিবেশী এক প্রবাসীর স্ত্রীকে মুরিদ বানান। এ সুবাদে ভণ্ডপীরের দরবারে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার এক বড় বোনের। এভাবে ধর্মের নানা অপব্যাখ্যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করে আসছিল এ নারীকে। তারপর ভণ্ডপীরের নজর পড়ে ওই নারীর ছোট বোনের ওপর। বড় বোনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে একই কায়দায় ছোট বোনকে মুরিদ করে নেয় ভণ্ডপীর। এরপর তাকেও নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছিল।
এখানেই শেষ নয় সর্বশেষ বড় বোনের ১৩ বছরের কিশোরী মেয়েও রেহাই পায়নি ভণ্ডপীরের কবল থেকে। তার মাকে নানা কৌশল করে বুঝিয়ে মেয়েকেও একই কায়দায় ধর্ষণ করতে শুরু করে। এ অপকর্ম হতো ভণ্ড পীরের আস্তানায়, আশুলিয়ার কুরগাঁও এলাকার ৫ তলা বাড়ির ৫ তলাতেই। দীর্ঘদিন ধরে আস্তানা তৈরি করে নিজ বাড়িতেই এমন ভয়ঙ্কর অপকর্ম চালিয়ে আসছিল ভণ্ডপীর। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, প্রতারণা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অপরাধে মামলা করা হয়েছে।
সে নিজেকে পীর পরিচয় দিয়ে কতিপয় দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন বয়সের নারী ও পুরুষকে মুরিদ বানিয়ে তাদের মাধ্যমে মাদক ও অসামাজিক কাজে লিপ্ত রেখে অবৈধ অর্থ আদায় করত বলে পুলিশ জানিয়েছে। এক নারীর দেয়া অভিযোগের ভিত্তিতে গত রবিবার দিবাগত গভীর রাতে তার মালিকানাধীন সূর্য্য ভিলার ৫ম তলার আস্তানা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ সময় ওই আস্তানা থেকে বিভিন্ন বয়সের তিন নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এজাহারে আরও জানা যায়, আরো অনেক নারী ওই আস্তানায় আসতো এবং ভণ্ড পীর মুনির তাদেরকেও ধর্ষণ করেছে। ধর্মবিরোধী কাজেই লিপ্ত ছিল মনির। পাশাপাশি সে বাদিকেও ইসলাম ধর্মের অবমাননাকর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার জন্য বাধ্য করতো এবং নিজেকে সে খোদা দাবি করে তার ছবিতে সেজদা করার জন্য বলতো।
বাংলাধারা/এফএস/এমআর/এসবি