আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশের মতো চট্টগ্রামের মিসরাইয়েও স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সেবা-পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ। এখানকার ১৬টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ২টি পৌরসভার অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এ অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সোমবার (১২ আগস্ট) সরেজমিন উপজেলার মিরসরাই পৌরসভা, মিরসরাই সদর ইউনিয়ন পরিষদ ও দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, এখানে উদ্যোক্তা, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা উপস্থিত থাকলেও নেই কোন জনপ্রতিনিধি।
মিরসরাই সদর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, এখানে নিজ কক্ষে কর্মহীন বসে আছেন উদ্যোক্তা মো. নিজাম উদ্দিন। এসময় তাঁর কক্ষে কোন সেবা প্রার্থীর দেখা মেলেনি। পরিষদের সচিব মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা বর্তমানে পূর্বের স্বাক্ষর করা নাগরিক সনদ দিতে পারছি। বাকি সেবা সমূহ সম্পর্কে চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন জনগণ সেবা নিতে আসলে আবেদন জমা নিতে।’
উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, এখানেও উদ্যোক্তা- প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ পরিষদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকলেও নেই জনপ্রতিনিধিরা। ৫ আগস্টের পর তারা সকলেই আত্মগোপন করেছে। এতে সাধারণ মানুষ নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কাঞ্চন কান্তি পাল বলেন, ‘স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রতিদিন শতাধিক জনগণ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সেবা-পরিষেবা নিতো। বর্তমানে জনপ্রতিনিধিরা না থাকায় প্রতিদিন ৫-৬ জনকে সেবা প্রদান করা যাচ্ছে। তবে আমরা আমাদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান বিপ্লব সাহেব থেকে শহরে গিয়ে স্বাক্ষর নিয়ে এসে কিছু সেবা দিতে পারছি।’
মিরসরাই পৌরসভায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে দপ্তরের অভ্যন্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চেয়ারে বসে থাকলেও নেই আগের মতো সোরগোল মানুষের আনাগোনা। খবর নিয়ে যানা যায়, এখানেও সেবা ব্যঘাত হচ্ছে।
এদিকে গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় অগ্নিসংযোগ ও হামলা হয় মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌরসভা কার্যালয়ে। সেখানে পৌর মেয়রের গাড়ি, উদ্যেক্তা কক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট হয়। এতে পৌরসভার সব ধরণের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার জনগণ তাদের নাগরিক সেবা-পরিষেবা না পাওয়ার বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’