চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরে কেনাকাটা জমে উঠেছে। এবার রমজানের শুরু থেকেই বিকিকিনি ভালো হচ্ছে। ক্রেতা টানতে উপজেলার বিপণি বিতানগুলোতে আলোকসজ্জার পাশাপাশি নিত্যনতুন পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিবছরের মতো এবারও মার্কেটে পুরুষের চেয়ে নারী ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ১৫ রমজান থেকে বেচাকেনা আরও বাড়বে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্যান্য বছরগুলোতে ১৫ থেকে ২০ রমজানের মধ্যে ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়। তবে এবার প্রথম রমজান থেকেই ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন বাজারের মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন ব্যবসায়ীরা। দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন পোশাকে সাজানো হয়েছে উপজেলার মার্কেটগুলো।
দেশীয় জামদানি, টাঙ্গাইল ও তাঁতের নতুন ডিজাইনের শাড়িসহ নারীদের বিভিন্ন পোশাক বিক্রি হচ্ছে ধুমধাম করে। ফ্যাশনের পাশাপাশি ঐতিহ্যেও গুরুত্ব দিচ্ছেন নারীরা। প্রচুর কালেকশনের পাশাপাশি দাম স্বাভাবিক থাকায় তারা খুশি। দোকানগুলো শাড়ি, থ্রিপিস, পাঞ্জাবি, জুতা, বাচ্চাদের নানা রঙের কাপড়ে সাজানো হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভাইরাল ও ফারসি। এই দুই পোশাক ক্রেতাদের বেশি আকৃষ্ট করছে এবং বিক্রিও ভালো হচ্ছে। এছাড়া নতুন কালেকশনের মধ্যে রয়েছে সারারা, আলিয়া কার্ড, সাদা বাহার, ওয়াকা, সাকিরা, তেরেনাম, সোহানাসহ নানা ধরনের নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বড় ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র বারইয়ারহাটের মসজিদ গলির লাকি ফ্যাশন মল ও সেঞ্চুরি মার্কেটে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর লাকি ফ্যাশন মল। পুরুষের তুলনায় নারীদের ভিড় সবচেয়ে বেশি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদকে ঘিরে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে উপজেলার বানিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র বারইয়ারহাটের গ্রীন টাওয়ারের অর্কিড, হোম প্লাস, সুলতান, সেঞ্চুরি সুপার মার্কেট, মসজিদ গলির লাকি ফ্যাশন মল, আল আমিন মার্কেট, জমিদার মার্কেট, জোরারগঞ্জ, আবুরহাট, মিঠাছরা, বামনসুন্দর দারোগাহাট, আবুতোরাব, মিরসরাই সদরের মোজাম্মেল এন্ড আজিজুল টাওয়ার, কাশেম শপিং কমপ্লেক্স।
শাড়ি-থ্রিপিসের পাশাপাশি প্রসাধনী, পারফিউম, কসমেটিক সামগ্রী, জুতা সহ বিভিন্ন পণ্য কিনছেন ক্রেতারা। বারইয়ারহাট মসজিদ গলির হাসান সুজ, অহনা সুজ, আয়েশা সুজ, গ্রীন টাওয়ারে অবস্থিত লটো, বাটা, এপেক্স, বারইয়ারহাটের নূর সু গ্যালারি, মিঠাছরার জুতার হাট শোরুমে ভালো বিকিকিনি লক্ষ্য করা গেছে। বিক্রির দিক থেকে এবারও শীর্ষে থাকতে পারেন বারইয়ারহাটের ঐতিহ্যবাহী লাকি ফ্যাশন মল, মিঠাছড়ার খাজা ক্লথ ও আবুতোরাবের ভূঁইয়া ক্লথ স্টোর।
বারইয়ারহাট লাকি ফ্যাশন মলের স্বত্বাধিকারী মো. শামসুদ্দিন বলেন, “প্রায় তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে বারইয়ারহাটে আমরা সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি। এবার রমজানের শুরু থেকেই বেচাকেনা মোটামুটি ভালো চলছে। আশা করছি, ১৫ থেকে ২০ রমজানের পর আরও বেশি বিক্রি হবে। অন্যদিনের তুলনায় ছুটির দিনে ভিড় বেশি হচ্ছে।”
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, “মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদের কেনাকাটা করতে পারে সে জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। এছাড়া থানার অন্যান্য বাজারে পুলিশের টহল টিম রয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চুরি-ছিনতাই রোধে আমার থানায় পুলিশের কয়েকটি টিম ভাগ হয়ে কাজ করছে।”