চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন একাধিক অভিবাবক। বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন স্থগিত করে যথাযথ নিয়ম কানুন মেনে পুনরায় তফসিলের দাবীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমকি শিক্ষা কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক বরাবর লিখিত দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৩ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৩ জুন অনুষ্ঠিতব্য আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে ৪টি সাধারণ অভিবাবক সদস্য পদের বিপরিতে ৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছে। সংরক্ষিত একটি পদের বিপরিতে দুজন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। গত ২৯ ও ৩০ মে এবং ১ জুন মনোনয়ন সংগ্রহ করার সময় ছিল। মোট ভোটার রয়েছে ৭৫১ জন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরমের মূল্য ১ হাজার টাকার পরিবর্তে ৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। এতে অনেক দরিদ্র অভিবাবক নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেনা। এছাড়া ভোটার তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তালিকার ৫৬৪ নং ভোটারের ক্ষেত্রে অনিয়ম করা হয়েছে। শিক্ষার্থীর বাবার নাম মৃত রবিউল হোসেন, মায়ের নাম নাজমা আক্তার। কিন্তু ভোটার তালিকায় লেখা হয়েছে জয়নাল আবেদীন। জয়নাল আবেদীন ওই শিক্ষার্থীর কেউ না। ৫৪৩ নম্বর ভোটারের ক্ষেত্রে অনিয়ম চোখে পড়েছে। ওই ভোটার আট বছর পূর্বে মারা গেছে। গত নির্বাচনে শিক্ষার্থীর মা ভোটার ছিল। এবার শিক্ষার্থীর বাবাকে ভোটার করা হয়েছে।
অভিবাবক মো. জাফর ইকবাল অভিযোগ করেন, কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করা হয়েছে। ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তির নাম রয়েছে। এছাড়া প্রার্থীর মনোনয়ন ফরমের মূল্য এক হাজার টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার টাকা। এতে অনেক দরিদ্র অভিবাবকের পক্ষে এত টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনে প্রার্থী হওয়া সম্ভব হয়নি।
আরেক অভিবাবক জামশেদ আলম বলেন, ওপেন নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা না করে ভেতরে ভেতরে তফশিল দিয়ে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রির্টানিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে যথাযথ নিয়ে নির্বাচন করার অনুরোধ জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আশা করবো বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশের লক্ষ্যে ১৩ জুনের নির্বাচন বাতিল করে পরবর্তি সময়ের জন্য তফসিল ঘোষণা করবেন।
এ বিষয়ে আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার জানান, প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরমের মূল্য আগের নির্বাচনের সময় করা রেজ্যুরেশন ফলো করে নির্ধারিত করা হয়েছে। আগেরকার নির্বাচনগুলোতে ২ হাজার ও ৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থীর ফরম ১ হাজার বিষয়ে নতুন নীতিমালা চলতি বছরের এপ্রিল মাসে হয়েছে। গত ২৯ ও ৩০ মে এবং ১ জুন মনোনয়ন সংগ্রহ করার সময় ছিল। অনেক প্রার্থী নির্দিষ্ট সময়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। ভোটার তালিকার অনিয়মের বিষয়ে তিনি জানান, স্কুলে অনেক ছাত্রছাত্রী রয়েছে, তার মধ্যে ভোটার হয়েছে ৭৫১ জন ছাত্রছাত্রীর অভিবাবক। তালিকায় থাকা ভোটারের মধ্যে কয়েকটি হয়তো সমস্যা থাকতে পারে।
এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির খান জানান, আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিবাবক সদস্য নির্বাচন নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরমের জন্য নেয়া অতিরিক্ত টাকা ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ভোটার তালিকার অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।