ksrm-ads

১৯ এপ্রিল ২০২৫

ksrm-ads

মিরসরাইয়ের দুর্গম পাহাড়ে মিললো ১৭শ’ বছরের পুরনো নিদর্শন

সাদমান সময়  »

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের দুর্গম পাহাড়ে ১ হাজার ৭০০ বছর আগের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন একদল গবেষক। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এসব নিদর্শন খ্রিষ্টীয় তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শতকের মধ্যকার।

মিরসরাইয়ের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান ‘নয়া দালান’ এর উদ্যোগে এই অনুসন্ধান পরিচালিত হয়। পাঁচ বছর ধরে ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদের সন্ধান পান চার গবেষক। তাঁরা হলেন চট্টগ্রামের জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরের সহকারী পরিচালক ড. আহমেদ আবদুল্লাহ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক সাদেকুজ্জামান তনু, একই বিভাগের প্রভাষক মুতাসিম বিল্লাহ ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটির আবিষ্কারক লেখক গবেষক ওসমান গনি এনু।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, মিরসরাইয়ে এর আগে এত প্রাচীন কোনো নিদর্শন আর পাওয়া যায়নি। সেখানে মাটি খুঁড়ে ইটের দেয়াল, পিলার, মূর্তির ভাঙা অংশ, বিভিন্ন রকম পাথরসহ প্রায় ২২ ধরনের নিদর্শন খুঁজে পাওয়া গেছে।

বিশেষজ্ঞ দলে থাকা ড. আহমেদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘যে নিদর্শন পেয়েছি তার গঠন কাঠামো, ইটের সাইজ, গাঁথুনি, মূর্তি ইত্যাদি পর্যালোচনা করেছি আমরা। প্রাথমিকভাবে মনে হয়, এটি খ্রিষ্টীয় তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শতকের।‘

গবেষকদলের সদস্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সাদেকুজ্জামান তনু বলেন, ‘যে নিদর্শন পেয়েছি, তাতে ধারণা করছি এটি কোনো মন্দির। মন্দিরকে ঘিরে সে সময়কার নগরী গড়ে ওঠার সম্ভাবনাও আছে। তাই এ জায়গাটি খনন করলে গৌরবজনক ইতিহাসের একটি অধ্যায় উন্মোচিত হবে। এটি প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে খনন করা দরকার।’

গবেষক ওসমান গনি এনু বলেন, ‘দীর্ঘ পাঁচ বছর আমি পাহাড়ে প্রত্নতত্ত্বের অনুসন্ধান করি। এখন এটি উন্মোচনের অপেক্ষায়। এটি এখন রাষ্ট্রীয় সম্পদ।’

উদ্যোক্তা সংস্থা ‘নয়া দালান’ এর চেয়ারম্যান মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি খনন করলে শুধু মিরসরাই নয়, এ অঞ্চলের ইতিহাসেও অজানা অধ্যায় সংযোজিত হবে। সরকারের সহযোগিতায় মহামূল্যবান এই জাতীয় সম্পদ উন্মোচিত হোক।’

ইতোপূর্বে স্থানীয় সাংসদ সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনও এ স্থানটি খনন করতে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কারের কথা শুনে মিরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমানও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের আবিষ্কার নিঃসন্দেহে যেকোনো অঞ্চলের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। দেড় হাজারেরও বেশি সময় আগে এ অঞ্চল কেমন ছিল? তা জানতে পারবে মানুষ।’

বাংলাধারা/এফএস/এআর

আরও পড়ুন