ভারী বর্ষণের পানি চলতে গিয়ে গোড়ার মাটি সরে ঝড়ো বাতাসে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কে উপড়ে পড়েছে একাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি। এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সকাল থেকে এক প্রকার বন্ধ রয়েছে সবধরনের যানবাহন চলাচল।
সোমবার (১৯ আগস্ট) রাত ও ভোরের ভারী বর্ষণ ও বাতাসের তীব্রতায় এসব খুঁটি উপড়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সড়কের দরিয়া নগর থেকে পাটুয়ারটেক পর্যন্ত প্রায় ২০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি মাটিতে হেলে পড়েছে। এতে সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গেলেও থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কাজে বেগ পেতে হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মেরিন ড্রাইভের বৈদ্যুতিক খুঁটি গুলোর অধিকাংশ পাহাড়ের পাদদেশে বসানো। ভারী বৃষ্টিপাতের পানি পাহাড়ের কিনার দিয়ে চলতে গিয়ে খুঁটির গোড়ার মাটি সরিয়ে দিয়েছে। ফলে দমকা বাতাসের তোড়ে বৈদ্যুতিক তারসহ খুঁটি গুলো উপরে সড়কের উপর হেলে পড়েছে। ভাগ্য ভালো এসব ঘটনা গভীর ও ভোররাতে হওয়ায় কোন দূর্ঘটনার শিকার হয়নি কেউ।
কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল কাদের গণি বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়কে প্রায় ২০টি বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে সড়কের উপর হেলে গেছে। আমরা তা সরানোর জন্য কাজ করছি। শহরের পরিস্থিতি ভাল আছে।
জানা গেছে, শনিবার রাত থেকে কক্সবাজারে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রবিবার দিনের ১২টা হতে সোমবার দিনের ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত ১৫৫ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালকের পক্ষে আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক সোমবার দুপুরে স্বাক্ষরিত বার্তায় জানান, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে একই এলাকায় লঘুচাপ আকারে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরী অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর-দিয়ে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ভারী বৃষ্টিপাত ও জোয়ারের পানিতে জলবন্দি হয়ে পড়ছে উপকূল ও নিম্নাঞ্চল। ডুবে যাচ্ছে চাষের জমি, পুকুর, খাল-বিল। বৃষ্টির তোড়ে ক্ষতির মুখে পড়ছে মহা ও আঞ্চলিক এবং গ্রামীণ সড়ক। এতে খানাখন্দে ভরে উঠছে এসব সড়কগুলো। ফলে যানবাহন চলাচল দূরে থাক মানুষ চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।