মিরসরাই প্রতিনিধি»
এরাদুল হক ভুট্টু। ছাত্র জীবন থেকেই ছিলেন সৌখিন মৎস্য চাষী। পারিবারিক পুকুর থেকে প্রথমে মৎস্য চাষে হাতেখড়ি। ১৯৯৫ সালে জড়ান পরিকল্পিত মৎস্য চাষে। মাত্র পাঁচ বছরেই তিনি পুরোপুরি মাছ চাষি হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেন। ২০০৮ সালে গড়ে তোলেন ‘মিশো ফিশিং’ নামে প্রতিষ্ঠান। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এখন এই মৎস্য চাষ করেই তার বাৎসরিক আয় প্রায় ১০ কোটি টাকা।
রবিবার (২৪ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সফল মৎস্যচাষির সম্মননা পান তিনি।
এসময় ভুট্টুর হাতে সম্মাননা সনদপত্র ও ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা।
এরাদুল হক ভুট্টু মিরসরাই উপজেলার ৮ নম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়নের জনাৰ্দ্দনপুর গ্রামের হাজী আব্দুল মান্নান এর পুত্র। মিরসরাই উপজেলায় মাছ উৎপাদনে (কার্প মিশ্র) সফল মৎস্যচাষি তিনি।
সাফল্যের পেছনের গল্প নিয়ে এরাদুল হক বলেন, ‘আধুনিক উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় পরিকল্পিত ভাবে মৎস্য চাষের সাথে জড়াই ১৯৯৫ সালে। ২০০০ সালে এসে পুরোপুরি মাছ চাষি হিসেবে আত্নপ্রকাশ করে ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠা করি ‘মিশো ফিশিং’ প্রতিষ্ঠান । লাভ লোকসান মিলে ব্যবসা। এ বিশ্বাসে কখনো হাল ছাড়িনি। মৎস্য চাষের আগ্রহ থেকে পরবর্তীতে ধাপে ধাপে মৎস্য অফিসের কর্মকর্তাদের পরামর্শে আধুনিক উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবসার প্রসার ঘটাই।’
তিনি বলেন, ‘এখন প্রায় ৮৫ একর মাছের প্রকল্প রয়েছে আমার। যা থেকে আমি বার্ষিক ১০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি করি। এসব মাছের ঘেরে ২০ জন শ্রমিক কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। মিরসরাইয়ের ইছাখালী, মুহুরী প্রজেক্ট, জনাদ্দনপুর, তেতৈয়াসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে এসব মাছের প্রকল্প।’
‘একজন উদ্যোক্তা হওয়া নিজের জন্য গৌরবের। দেশের জাতীয় চাহিদার যোগানদাতা। চাকরি না করে উদ্যোক্তা হলে অনেক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। নিজের লাভের পাশাপাশি শ্রমিকদেরকে বেকরত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করে স্বাবলম্বী করা যায়।’—যোগ করেন এরাদুল।
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মাছের খাদ্যের অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি। মৎস্য চাষীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। খাদ্যের দাম যে হারে বাড়ছে মাছের দাম বাড়ছেনা। চাষীদের জন্য জামানত বিহীন স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা অনুরোধ করেন তিনি।’
এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সফল মৎস্য চাষি নির্ধারণের অনেক গুলো বিষয় রয়েছে। আমরা দীর্ঘ যাচাই বাছাই করে দেখেছি এরাদুল হক ভুট্টু একজন সফল মৎস্য চাষী। তিনি মাছ চাষের মাধ্যমে নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন পাশাপাশি বহু লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রেখে আমিষের পুষ্টি চাহিদা পুরনে অসামান্য অবদান রাখেন। আমরা জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে তাকে সফল মৎস্য চাষীর সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।’