ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসানকে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের উপ-পরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে ইমাম হাসান তাইমকে গুলি করে হত্যার মামলায় আসামি যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান। টেকনাফে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আবুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশের হেফাজতে আনা হয়েছে।
বিষয়টি ঢাকায় সংশ্লিষ্ট থানাকে অবিহিত করা হয়েছে উল্লেখ করে জসিম আরো জানান, ওখান থেকে পুলিশের একটি দল কক্সবাজারে আসছে। তারাই আবুল হাসানকে ঢাকা নিয়ে যাবে।
নিহত তাইম নারায়ণগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এম. ডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত ২০ আগস্ট নিহত তাইমের মা মোসা. পারভীন আক্তার ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে পুলিশের এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীম ও এসি তানজিল আহমেদকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সরকার কারফিউ জারি করে। ওইদিন দুপুর ১২টা থেকে ২ টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। ওই সময় তাইম তার দুই বন্ধুর সাথে যাত্রাবাড়ির কাজলা এলাকায় চা খেতে যায়। ওই সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করছিল। তখন ডিসি ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেন ও তার সঙ্গীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি চালায়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রাণ ভয়ে আন্দোলনকারীরা এলোপাথারী ছুটাছুটি করতে থাকে। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের সাটার টেনে দেয়। কিন্তু সাটারের নিচের দিকে আধা হাত খোলা ছিলো। সেখানে অবস্থারকারীদের পুলিশ টেনে বের করে। জাকির হোসেন গুলির থেকে বাঁচতে চাইলে দৌঁড় দিতে বলে। তখন তাইম সবার আগে দৌঁড় দেয়। জাকির গুলি করে। বিনা চিকিৎসায় তাইম সেখানেই মারা যায়।
বিষয়টি প্রকাশ পাবার পর এক হৃদয়বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়।