আলমগীর মানিক »
রাঙামাটিতে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন মারমা লিবারেশন পার্টির (এমএলপি) এক সদস্যসহ দুইজনকে ২৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাঙামাটির জেলা ও দায়রা জজ নুরুল ইসলাম এর আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত দুইজনের মধ্যে একজন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলাধীন মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা মোঃ ছিদ্দিক মিয়া পোদ্দার(৫০), অপরজন চন্দ্রঘোনাস্থ নোয়াপাড়ার বাসিন্দা মংকাইনু মারমা(৩০)। আসামী মংকাইনু মারমা মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন মারমা লিবারেশন পার্টির সক্রিয় সদস্য বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
এসময় আসামীরা দুইজনেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পেশকার কামরুল ইসলাম। তিনি জানান, সর্বমোট আটজন সাক্ষীর সরাসরি সাক্ষ্য প্রদানসহ সার্বিক তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করে আদালত এই রায় দিয়েছেন।
মামলার এজাহারসূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৮ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর রাঙামাটির নানিয়ারচরের বগাছড়ি এলাকার জনৈক লাভলী আক্তারের চায়ের দোকানে অস্ত্র-গুলি ক্রয়-বিক্রয় চলছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে অস্ত্র ও গুলি বিক্রিকালে ছিদ্দিক ও মংকাইনুকে হাতে নাতে আটক করে যৌথবাহিনীর সদস্যরা। এসময় তাদের কাছ থেকে ১টি বন্দুক, ২টি কার্তুজ, থ্রি নট থ্রি রাইফেলের ১৭ রাউন্ড গুলি ও এসএমজি’র ২৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এই ঘটনায় এসআই মোঃ রওশন জামান এর এজাহারের প্রেক্ষিতে নানিয়ারচর থানায় ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের (সংশোধনী/২০০২) এর ১৯(এ)/এফ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নাম্বার-১।
রাঙামাটির আদালত সূত্র জানিয়েছে, গত ৩১/০১/২০১৯ তারিখে এই মামলাটি রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারের জন্য উত্থাপিত হয়। পরবর্তীতে মামলার মোট আটজন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমানে আসামীরা দোষি সাব্যস্ত হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ নুরুল ইসলাম আসামী মোঃ ছিদ্দিক মিয়া পোদ্দারকে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের (সংশোধনী/২০০২) এর ১৯(এ) ধারায় ২০ বছর, ১৯(এফ) ধারায় আরো ৭ বছর এবং আসামী মংকাইনু মারমা(৩০)কে অস্ত্র আইনের ১৯(এফ) ধারায় ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিতাদেশ প্রদান করেন।
এই মামলায় আটককৃত আসামী মংকাইনু মারমা পাশর্বর্তী রাষ্ট্র মায়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন মারমা লিবারেশন পার্টির সক্রিয় সদস্য। জানাগেছে, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান ও রাঙামাটির রাজস্থলী, কাপ্তাই-কাউখালী-বিলাইছড়ি উপজেলার গভীর অরন্যে এই গ্রুপটি অবস্থান করে থাকে।
বাংলাধারা/এফএস/এইচএফ