ভুতুড়ে বিলে জর্জরিত রাঙামাটির ইসলামপুরবাসী। এক মাসের বিল ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৭০ হাজারের উর্ধ্বে। কাপ্তাই হ্রদের ওপারে বসবাস করা হতদরিদ্র খেটে খাওয়া কয়েকশো পরিবারের বিদ্যুৎ বিলে এমন তুঘলকি কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
রাঙামাটি শহরের অদূরে ১নং ওয়ার্ডের ইসলামপুর নামক এলাকা প্রায় দুই শতাধিক অসহায় দিনমজুর পরিবারের বসবাস। যাদের শতকরা ৯৯ জনেই দিনে এনে দিনে খেয়ে দিনাতিপাত করতে হয় তাদের। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে ভুতুড়ে বিল করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। যেখানে মাসের বিদ্যুৎ বিল আসে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা সেখানে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ৭০ হাজার টাকার বিল করেছে রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে আসছে তারা। নেই কোনো বকেয়া। যার পরিমান ছিলো ২শ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা। কিন্তু হঠাৎ করে এমন বিদ্যুৎ বিলে তাদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো। কেন এমন বিদ্যুৎ বিল করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ? এমন বিদ্যুৎ বিলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
অধিকাংশ গ্রাহকের দুই থেকে পাঁচ গুণ বেশি বিল করা হয়েছে। বিল কপিতে ব্যবহৃত ইউনিটের কলাম শূন্য থাকলেও পরিশোধের কলামে বিরাট অঙ্কের টাকা বসিয়ে বিল সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিকার চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন বলেও অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেন। এভাবে অনেক গ্রাহককে ভুতুড়ে বিল দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। নানা ঝক্কি-ঝামেলার ভয়ে অনেকেই ভুতুড়ে বিল পরিশোধ করতে বাধ্য হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুতের এক কর্মচারী জানিয়েছেন, মিটাররিডাররা গ্রাহকের মিটার না দেখে বিল করায় এবং ‘সিস্টেম লস’ সমন্বয় করতে বাড়তি বিল করা হয়েছে। গ্রাহকরা অভিযোগ করলে অনেক ক্ষেত্রে বিল কমিয়ে দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রেই গ্রাহককে বাড়তি বিল পরিশোধ করতে হয়। এতে সাধারণ গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে নতুন প্রিপেইড মিটার লাগানোর কারণে পুরাতন মিটারের যে রেটিং বকেয়া রয়েছে তা একসাথে বিল আকার তাদের কে দেওয়া হয়েছে। রেটিং বকেয়া থাকার কারণ জানতে চাইলে রাঙামাটি বিদ্যুত বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জালাল উদ্দিন বলেন, হয়তো বিদ্যুৎ বিল করার সময় বিলে কম রেটিং তোলা হয়েছে যার কারণে দীর্ঘদিনের রেটিং জমা হয়ে এই সমস্যা হয়েছে। তবে যারা এই পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল একই সাথে পরিশোধ করতে পারবে না, তাদের কয়েক কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ দেয়া হবে।
এমন অসহায়ত্বের মাঝে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল যেন ‘মরার পর খরার ঘা’ এমন ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল থেকে পরিত্রাণ চায় স্থানীয়রা।