রাঙামাটি প্রতিনিধি »
সমঝোতায় ভাগাভাগি করে নেওয়া হলো পার্বত্য রাঙামাটির ১২টি এলএসডির (স্থানীয় খাদ্যগুদামের) শ্রম ও হস্তার্পণ ঠিকাদারী কাজ। আর এতে করে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।
অভিযোগ উঠেছে, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এবারের এই টেন্ডারে প্রায় সাড়ে পাঁচশত দরপত্র সিডিউল ক্রয় করে রাঙামাটিসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলের ঠিকাদাররা।
তবে সোমবার (১২জুন) দরপত্র জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের এক কর্মকর্তার তত্বাবধায়নে রাঙামাটির জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিষয়টি সমজোতার দিকে ঠেলে দেন। পরে জেলার বনরূপার হোটেল হীলটপের একটি কক্ষে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সিদ্বান্তের মাধ্যমে একটি সংঘবব্ধ সিন্ডিকেটকে উচ্চ মূল্য ১২টি এলএসডির শ্রম ও হস্তার্পন কাজ।
রাঙামাটির জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১২টি এলএসডিতে প্রতিটিতে একজন করে শ্রম ও হস্তার্পণ (লেবার এ- হ্যা-েলিং) ঠিকাদার নিয়োগের জন্য আগ্রহী প্রতিষ্ঠান-ঠিকাদারের নিকট হতে দরপত্র আহবান করা হয়। যারা রাঙামাটি সদর, কাউখালী, কাপ্তাই, বড়ইছড়ি, রাজস্থলী, বিলাইছড়ি, দুরছড়ি, নানিয়ারচর, বরকল, লংগদু ও বাঘাইছড়ি এলএসডির খাদ্য-শস্য, খাদ্য দ্রব্য, খালী বস্তা, যে কোনো মালামাল সামগ্রী শ্রম ও হস্তার্পণ কাজ বাস্তবায়ন করবে।
ঠিকাদারদের অভিযোগ, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা অনুযায়ি প্রতিযোগিতা মূলক দরপত্রের মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরের দরদাতাকে কাজ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে এখানে হয়েছে সম্পূর্ণ তার উল্টো। ঠিকাদারদের দরপত্র বিক্রি করলেও আর ড্রপিংয়ে (দরপত্র জমা দেওয়ার) সুযোগ দেওয়া হয়নি। সমজোতার মাধ্যমে গেল বারের ৪৪ টাকা ৫০ পয়সার কাজ এবার ১১৮ টাকা সর্বনিম্ন দর দেখিয়ে নির্ধারিত ঠিকাদারদের কাজগুলো দিয়ে দেওয়া হয়।
জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকের দপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, রাঙামাটি খাদ্য বিভাগের ১২ এলএসডির শ্রম ও হস্তার্পণ ঠিকাদার নিয়োগে সমঝোতার বিষয়টি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) মহোদয় জেনে গেছেন। ইতিমধ্যে স্যার (আরসিফুড) টেন্ডার বাতিলের পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু রাঙামাটি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড) কানিজ জাহান বিন্দু টেন্ডার বাতিল করেননি। এমনকি টেন্ডার বাতিল না করলে রি-টেন্ডার দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তাতেও তিনি আমতা-আমতা করছেন। বিষয়টি কোন দিকে গড়াচ্ছে এখন কিছুই বুঝা যাচ্ছে না।
জেলার একাধিক খাদ্য পরিবহন ঠিকাদার জানান, শ্রম ও হস্তার্পণ ঠিকাদারের কোনো কাজ নেই। মূলত জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের একটি সিন্ডিকেট প্রতি দুই বছর অন্তর কাগজে কলমে শ্রম ও হস্তার্পণ ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েই সরকারি কোষাগার লুটপাটে মেতে উঠে। আর এদিকে খাদ্য গুদামে নিয়োজিত শ্রমিকরা (কুলিরা) পারিশ্রমিক হিসেবে পরিবহন ঠিকাদারদের কাছ থেকে ট্রাকপতি এক হাজার টাকা করে আদায় করে নেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কানিজ জাহান বিন্দু গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর গরম হয়ে যান। তিনি বলেন, নিয়মনীতি মেনেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে।