বাংলাধারা প্রতিবেদন »
রাঙ্গুনীয়া উপজেলায় চলাফেরা করতে অক্ষম প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ‘গায়েবি’ নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। মামলা দায়েরের বিষয়টা প্রকাশ্যে আশার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে এলাকার গণ্যমান্য মানুষসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা এ মামলার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে তারাই বলতে গেলে ভিকটিম। মামলার বাদিই শাশুড়িকে নির্যাতন করতো বলে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। এ বিষয়ে সামাজিকভাবেও তা মিমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু মামলার বাদির উগ্রতার কারণে তা সমাধান সম্ভব হয়নি।’
রাঙ্গুনীয়া থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুব মিল্কি মামলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘মামলাটি তদন্ত করছি। তদন্তে যা উঠে আসবে তাই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হবে।’
স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় অনেক ক্ষেত্রে সাজানো অনেক ঘটনা উল্লেখ করা হয়। মামলায় এ ধরনের সাজানো কিছু রয়েছে কি না তা আমরা খতিয়ে দেখবো।’
জানা গেছে, গত ৫ অক্টোবর নাজেহাদ ফারজানা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে একটি মামলা দায়ের করেন। যাতে আসামি করা হয় নিজের স্বামী জালাল উদ্দিন, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আহম্মদ মিয়ার স্ত্রী ও বাদির শাশুড়ি মঞ্জুরা বেগম, ননদ তারিন আকতার তারুসহ পাঁচ জনকে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, যৌতুকের জন্য বাদিকে মারধর করে। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি এজাহারভুক্ত আসামী জালাল উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছেন। মামলার অপর বিবাদী মঞ্জুরা বেগম দীর্ঘদিন ধরে চলাফেরা করতে অক্ষম এবং চিকিৎসার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। মামলার এজাহারে উল্লেখিত তারিখে তিনি ঢাকায় ছিলেন।
এলাকার সর্দার আহমেদ ছবির বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পরিবার এলাকায় প্রচুর দান করেন। তারা যৌতুকের জন্য গৃহবধুকে মারধর করতে পারে তা অবিশ্বাস্য। যে তারিখে মারধরের কথা উল্লেখ হয়েছে সে তারিখে মামলার আসামীদের কেউ এলাকায় ছিল না।’
এদিকে, মামলার বিষয়ে জানতে মামলার বাদী নাজেহাদ ফারজানার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথমে কল সিরিভ করে নাজেহাদ ফারজানা পরিচয় দেন, পরে এদিক থেকে সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে ওদিকে থেকে মোবাইল সংযোগ কেটে দেন। পরে আবার কল করা হলে এক পুরুষ ব্যাক্তি কল রিসিভ করে। নাজেহাদ ফারজানার কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করে বলেন, ‘তার (নাজেহাদ ফারজানা) সাথে কথা বলা যাবে না, আমাকে বলেন যা বলার’।
মামলার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি (পুরুষ) বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা মামলা করি নাই’- বলে মোবাইল সংযোগ কেটে দেন।
বাংলাধারা/এফএস/এএ