পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নানা অনিয়মের অভিযোগে কক্সবাজারের রামু থানার তিনজন উপ-পরিদর্শকসহ চারজনকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। তবে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মতান্ত্রিক বদলি।
বদলিরা হলেন- উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কাওসার, মো. আল আমিন, মুহাম্মদ ইমরান উদ্দিন ও কনস্টেবল মো. মাহমুদ (কং-৫৫৫)। বৃহস্পতিবার (৯ মে) কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলামের সাক্ষরিত এক আদেশে এই তথ্য জানা গেছে।
বদলির আদেশ মতে, রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কাওসারকে পেকুয়া থানা, মুহাম্মদ ইমরান উদ্দিনকে সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়ি, মো. আল আমিনকে কুতুবদিয়া ও কনস্টেবল মো. মাহমুদ (কং-৫৫৫)কে সেন্টমার্টিন পুলিশ ফাঁড়িতে পদায়ন করা হয়েছে। আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ রয়েছে।
পুলিশ সুপারের সাক্ষরিত আদেশটি চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজিসহ ৯ জনকে অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে।
সূত্র মতে, দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু তাহের দেওয়ানের আশকারায় গড়ে উঠেছে উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কাওসার ও মো. আল আমিনের নেতৃত্বে ‘সিভিল টিম’। এই টিমের সব কিছুই দেখভাল করেন ওসির আস্তাভাজন এসআই মো. আল আমিন। এ ছাড়া এই টিমে রয়েছে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ ইমরান উদ্দিন, মো. আহসান হাবীব (কং-১০৯৯), পিপল দেব (মুন্সী) (কং- ৫৩৯), রাকিব হোসেন (কং-৩৮৬), মো. তৌহিদুল ইসলাম (কং-১১৭৮), মো. মাহমুদ (কং-৫৫৫), মো. আবু বক্কর (কং- ২৪৭৩)। তাদের ছত্রছায়ায় পুরো রামু উপজেলাজুড়ে চলছে নানা অপরাধ। এই সিভিল টিমের সহযোগিতায় রামুর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবা, গরু, সিগারেট পাচার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমনকি রাতে মাটি পাচারেও সহযোগিতা করে আসছে এই সিভিল টিম।
এছাড়াও এ টিমের লোকজনের বিরুদ্ধে ইয়াবাসহ লোকজন ধরে থানায় এনে ছেড়ে দেয়া এবং জব্দকৃত ইয়াবাও বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে এই টিমের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আল আমিনের বিরুদ্ধে ইয়াবা সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখায় কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অনিয়ম নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে বদলিকৃত তিন এসআই ও এক কনস্টেবলসহ অনেকের নাম ছিল।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রামু থানা থেকে বদলিকৃত তিন উপ-পরিদর্শকসহ চারজনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অভ্যান্তরীণ তদন্তও শুরু হয়েছে।
একসাথে চার সহকর্মীকে বদলির বিষয়ে জানতে রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি কল রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে সবিশেষ লিখে বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হলেও তিনি তারও উত্তর করেননি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় তারা বদলি হয়েছেন। অন্য অভিযোগের বিষয়গুলো জানা নেই। এ ধরনের অভিযোগ থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।