ksrm-ads

৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ksrm-ads

রুবেলের টার্গেটে কোহলি

বাংলাধারা প্রতিবেদন »

কী সেই তেজ, কী অগ্নিমূর্তি তার, কী বিধ্বংসী সেই ইয়র্কারগুলো- বিশ্বকাপের প্রতিটি ভেন্যুর চার্জার স্টেশনে এখনও আগের বিশ্বকাপে রুবেল হোসেনের সেই বোলিং গোলার দৃশ্য রিপ্লে চলতে থাকে। অথচ সেই রুবেলই কি-না এবার কেমন যেন ম্রিয়মাণ, কিছুটা মনমরা আর অনেকটাই পথ ভোলা! আসলে নিজেকে সূক্ষ্ণভাবে দেখার জন্য যে আয়না প্রয়োজন, সে আয়না জলজ হলে চলে না, চলে না স্বচ্ছ হলেও। তার তো প্রয়োজন ও পিঠে পারদের আস্তরণ।

তাই শুধু মাধুর্যই নয়, তিক্ততাও দরকার। ওপিঠের সেই তিক্ততার পারদ যেন খুঁজে পাওয়া গেছে। রুবেলকে বলে দেওয়া হয়েছে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য প্রস্তুত থাকতে, তৈরি রাখতে তার সেই অস্ত্রগুলো যা দিয়ে বিরাট কোহলির কাঁটা তুলে নেওয়া যায়। ওই একটি বিশেষ উইকেট তুলে নেওয়ার জন্যই মেহেদী হাসান মিরাজের বদলে নামানো হতে পারে রুবেল হোসনকে।

ছুটি কাটিয়ে আসা টিম ম্যানেজমেন্টের প্রাথমিক মিটিংয়েই রুবেলকে খেলানোর প্রস্তাব আসে এবং আপাতত এটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে স্পিন নয়, পেস বোলিং অ্যাটাক দিয়েই ভারতকে আক্রমণ করতে হবে এবং সেই তালিকায় মাশরাফি, মুস্তাফিজ আর সাইফুদ্দিনের সঙ্গে থাকবেন রুবেল হোসেন। বিরাট কোহলির সঙ্গে তার পুরনো একটি হিসাব রয়েছে।

সেই বয়সভিত্তিক দলে খেলার সময় একবার তাকে গায়ের রঙ নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছিলেন বিরাট কোহলি। তারপর থেকে কোহলিকে দেখলেই ভেতরে যেন একটা তোলপাড় হয়ে যায়। দু’জনেরই বয়স বেড়েছে, অভিজ্ঞতা আর পারিপাশ্বিকর্তার বদলে দিয়েছে দু’জনকে। টিম হোটেলের ব্রেকফাস্ট বুফেতে দেখা হওয়ার পর হাসিমুখে কথাও হয়েছে। কিন্তু পুরনো সেই দাগটা এখনও বোধহয় মুছে যায়নি। রুবেল হোসেনের ভেতরে জমে থাকা সেই জেদটাই কাজে লাগাতে চাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে রুবেল হোসেনের বলেই ৩ রানে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছিলেন কোহলি।

তারপর টি২০ বিশ্বকাপে দেখা হলেও রুবেলের বল খেলতে অস্বস্তিতে পড়তে দেখা গেছে কোহলিকে। তাই কোহলি বধে রুবেল স্পেশাল আর রোহিত শর্মার জন্য মুস্তাফিজ টনিক রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কলকাতার সাংবাদিক দেবাশিষ দত্ত, ষাটোর্ধ্ব মানুষটির রসবোধ প্রবল।

বার্মিংহাম প্রেসবক্সে বসে বলছিলেন তিনি- ভারতীয় দলের মিডল অর্ডার হচ্ছে তিলেখাজার মতো। শুরুতে রোহিত আর কোহলির উইকেটে দাঁত বসাতে পারলেই মিডল অর্ডার একেবারে ফাঁফা ঝুরঝুরে …। টাইগারদের থিঙ্ক ট্যাঙ্কের বিশ্নেষণেও সেটাই বেরিয়ে এসেছে। রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলি- শুরুর দিকে এই দুটি উইকেট তুলে ফেলতে পারলে মাঝের ওভারগুলোতে চাপে রাখা যাবে। স্পিন এমনিতেই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে ভাত-মাছের মতো! তাই স্পিন দিয়ে নয়, রুবেল আর মুস্তাফিজের গতি আর সুইং দিয়েই ভারতীয়দের চাপে রাখার কৌশল ঠিক করা হয়েছে।

আর ব্যাটিংয়েও একটা ধারণা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা হয়েছে প্রাথমিক মিটিংয়ে। তাহলো, থ্রি ফিফটি। আপাতত এটাই টাইগারদের সামানে রাখা বোর্ডে লেখা তিন অঙ্কের স্কোর। প্রথমে ব্যাটিং করলে এই স্কোরটি ধরেই এগোতে হবে এবং পরে ব্যাটিং করলেও এই রান তাড়া করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে। কেননা বার্মিংহামের এই মাঠেই দু’বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিতে ভারতের বিপক্ষে ২৬৪ রান করে ৯ উইকেটে হারতে হয়েছিল।

তাই তিনশোর কম কোনো কিছুই সেদিন কাজে আসবে না। এটা এক প্রকার নিশ্চিত টিম ম্যানেজমেন্ট। যদিও এবারের বিশ্বকাপে এই মাঠে খেলা দুটি ম্যাচে (ভারত- ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে) আড়াইশ’ ছাড়ানো ইনিংস দেখা মেলেনি। তাছাড়া কোনো পিচে সেদিন খেলা হবে, সেটিও জানতে পারেননি মাশরাফিরা। তাই একটা ধূম্রজাল থেকেই যাচ্ছে। কিন্তু যেটা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই সেটা হলো, কোহলিদের স্পিন নয়, ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতির বলেই কাহিল করা সম্ভব এবং সে জন্য ঘুমিয়ে পড়া রুবেলকেই জাগিয়ে তুলতে হবে। তাকে ঝাঁকিয়ে বলতে হবে- দেখ তোমার সামনে সেই বিরাট কোহলি …। কিছু একটা করো …।

বাংলাধারা/এফএস/এমআর/টিএম/বি

আরও পড়ুন