‘জাহেলিয়তের অন্ধকারে পৃথিবীর মানুষ যখন বিপর্যস্ত তখন মহান আল্লাহর অনুগ্রহে ধরার বুকে শুভাগমন করেন প্রিয় রাসুল (দ.)। অন্ধকারে ডুবে যাওয়া মানুষকে টেনে তুলেন তৌহিদের আলোয়। প্রিয় নবীজির পরবর্তীতে এ মহান দায়িত্ব পালন করছেন অলি আল্লাহগণ। সময়ের পরিক্রমায় আমরা পেয়েছি কালজয়ী মনীষী, আধ্যাত্মিকতার ভূবন কাঁপানো ব্যক্তিত্ব, খলিলুল্লাহ আওলাদে মোস্তফা, খলিফায়ে রাসুল (দ.) হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে। যিনি নব্য জাহেলিয়ত যুগে এসে এমন এক আধ্যাত্মিক বিপ্লব ঘটিয়েছেন যা ইতিহাসেই অভূতপূর্ব। প্রিয় রাসুল (দ.) এর ওয়ারিশ হিসেবে দ্বীন ইসলামের সত্যিকারের দাওয়াত মানুষকে পৌঁছে দিয়েছেন। প্রিয় নবীজির নূরে বাতেন মানুষের ক্বলবে দান করে সত্যিকারের আলোকিত মানুষ তৈরিতে হযরত গাউছুল আজম (রা.) ঐতিহাসিক অবদান রেখেছেন। বিশেষত যুব সম্প্রদায়ের সামনে এমন এক যুগোপযোগী দর্শন তুলে ধরেছেন যা সব সময়ের জন্য প্রযোজ্য।’
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদের গাউছুল আজম সিটিতে অনুষ্ঠিত কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রা.) স্মরণ ও ৭০তম পবিত্র মিরাজুন্নবী (দ.) উদযাপন ও সালানা ওরছে হযরত গাউছুল আজমের (রা.) ঈছালে ছাওয়াব মাহফিলে তাঁর একমাত্র খলিফা, আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মাননীয় মোর্শেদে আজম (ম.) আলী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যুবকদের উদ্দেশে তিনি ঘোষণা করেন, ‘হে যুবক! নামাজ পড়ো, রোজা রাখো, নবী করিম (দ.) এর উপর দরূদ পড়ো মাতৃভূমি শান্ত করো’। এ মহান আহ্বান শুনে যুবকদের মাঝে হেদায়তময় যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে তা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ইসলামের সোনালী যুগের দিনগুলোকে। নূরে কুরআন তথা ফয়েজে কুরআন দিয়ে কুরআনের প্রতি প্রেমকে গেঁথে দিয়েছেন অন্তরে অন্তরে। মোরাকাবা-জিকিরুল্লাহর তালিম দিয়েছেন। হারাম-হালাল পার্থক্য নিরূপন করে চলার তাগিদ দিয়েছেন সমস্ত জীবনে। এ মহান খলিফায়ে রাসুল পবিত্র মেরাজুন্নবী (দ.) এর বরকতময় সময়ে রফিকে আলার দিদারে মিলিত হন। খলিফায়ে রাসুল (দ.) হযরত গাউছুল আজম (রা.) এর স্মরণে হাজার হাজার খতমে কুরআন, খতমে তাহলিল, নফল রোজা পালনের মধ্য দিয়ে মোবারক এই ওরছে পাক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে শরীয়তের বিন্দু পরিমাণ লঙ্ঘন নেই। অপসংস্কৃতির কোন ছোঁয়া নেই। গরু-মহিষ, নজর-নেওয়াজ, টাকা-পয়সা ইত্যাদি কোন কিছু না আনার জন্য দরবার শরীফ হতে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ওরছে পাকে কাউকে কোন কিছু আনার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সকলকে বলা হয়েছে খুলুছিয়তের সাথে এ মহান ওরছে পাকে অংশগ্রহণ করার জন্য। এটাই সবচেয়ে বড় উপহার হিসেবে বিবেচিত হবে। তিনিই রূহানি রেঁনেসার অনন্য রূপকার হযরত গাউছুল আজম (রা.)।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট ও সিনেট সদস্য এবং সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সালানা ওরছে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক মোহাম্মদ ফোরকান মিয়া, প্রফেসর ড. জালাল আহমদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সরোয়ার কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। সালানা ওরছে বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুহাম্মদ শফিউল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন নুরী প্রমুখ।
পূর্ব ষোষিত তারিখ থেকে মহিলা, প্রবাসী, তরিক্বতপন্থী ও সালানা ওরছে উপস্থিত মুসলিম জনতা সর্বমোট ২০ হাজার ৯শ খতমে কোরআন এবং ১১৪৯টি খতমে তাহলীল আদায় করেন।
মিলাদ ও কিয়াম শেষে প্রধান অতিথি দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ্র ঐক্য, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি, অসহায় নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম’র (রা.) ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন। বিজ্ঞপ্তি